মেহগনি কাঠের দরজার দাম ও ডিজাইন | বাংলাদেশে এর দরজার বিস্তারিত

মেহগনি কাঠের দরজার দাম ও ডিজাইন

মেহগনি কাঠের দরজা দীর্ঘস্থায়ী, দৃষ্টিনন্দন এবং আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে পরিচিত। ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে দরজা শুধু একটি প্রয়োজনীয় উপকরণ নয় এটি বাড়ির সৌন্দর্য এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। বাংলাদেশে মেহগনি কাঠের দরজা দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কারণ এটি টেকসই এবং পরিবেশ প্রতিরোধী। তবে মেহগনি দরজার দাম ও ডিজাইন এবং মান নির্ধারণের আগে কিছু বিষয় জানা জরুরি। এই আর্টিকেলে আমরা মেহগনি কাঠের দরজার দাম, বিভিন্ন মাপ ও ডিজাইন বানানোর খরচ এবং কেনার আগে করণীয় বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এটি আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।

মেহগনি কাঠ তার উচ্চমানের টেকসই গুণাবলী, মসৃণ টেক্সচার এবং প্রাকৃতিক লালচে-বাদামি রঙের জন্য সারা বিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয়। এটি কাঠের প্রাকৃতিক শোভা এবং দীর্ঘস্থায়িত্বের কারণে প্রিমিয়াম ক্যাটাগরির কাঠ হিসাবে পরিচিত। বিশেষত বাংলাদেশে ঘরের ইন্টেরিয়র ডিজাইনে মেহগনি কাঠের দরজা অত্যন্ত জনপ্রিয়।

মেহগনি কাঠের আরেকটি বড় সুবিধা হলো এটি পরিবেশের বিভিন্ন চাপে সহ্য করতে সক্ষম। এটি সহজে ফেটে যায় না বা আর্দ্রতায় ফুলে যায় না। ফলে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশের বাড়ির জন্য এটি একটি আদর্শ পছন্দ। এছাড়া এর শক্ত কাঠামো এটিকে অত্যন্ত নিরাপদ এবং দীর্ঘস্থায়ী করে তোলে।

আর পড়ুন: সেগুন গাছের দাম 

মেহগনি কাঠের বৈশিষ্ট্য – মেহগনি কাঠের দরজার দাম ও ডিজাইন

মেহগনি কাঠের দরজা নির্বাচন করার আগে এর বৈশিষ্ট্যগুলো জানা গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো:

  • টেকসই ও মজবুত: মেহগনি কাঠ অত্যন্ত মজবুত এবং টেকসই। এটি ঘরের দরজা বা জানালার জন্য ব্যবহার করলে অনেক বছর ধরে বিনা রক্ষণাবেক্ষণে টিকে থাকে।
  • প্রাকৃতিক সৌন্দর্য: মেহগনি কাঠের রঙ ও টেক্সচার স্বাভাবিকভাবেই অত্যন্ত আকর্ষণীয়। পলিশ করার পর এটি আরও বেশি উজ্জ্বল এবং প্রিমিয়াম ফিনিশিং প্রদান করে।
  • পরিবেশ প্রতিরোধ ক্ষমতা: মেহগনি কাঠ পানি এবং আর্দ্রতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধী। এটি সহজে পোকা বা কীটপতঙ্গ দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।
  • কারুশিল্পের উপযোগিতা: মেহগনি কাঠের নরম অথচ মজবুত প্রকৃতি এটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কারুকার্য বা নকশা তৈরি করার সুযোগ দেয়। ফলে এটি ক্লাসিক এবং আধুনিক উভয় ধরনের ডিজাইনে ব্যবহৃত হয়।
  • শব্দ নিরোধক: মেহগনি কাঠের ঘন গঠন এটি শব্দ নিরোধক করে তোলে। ঘরের প্রাইভেসি নিশ্চিত করার জন্য এটি একটি ভালো উপকরণ।

মেহগনি কাঠের দরজার ধরন

মেহগনি কাঠের দরজা বিভিন্ন ধরণের ডিজাইন ও কাঠামোতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে জনপ্রিয় কিছু ধরণের দরজা হলো:

  • সলিড মেহগনি দরজা: এই ধরনের দরজা সম্পূর্ণ মেহগনি কাঠ দিয়ে তৈরি। এটি খুবই শক্ত এবং টেকসই। সাধারণত অফিস অভিজাত ঘর বা প্রধান দরজার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়।
  • ফ্রেম এবং প্যানেল দরজা: এই দরজাগুলোতে কাঠের ফ্রেম থাকে এবং এর মধ্যে বিভিন্ন ডিজাইনের প্যানেল থাকে। এটি দেখতে আধুনিক এবং কম খরচে তৈরি করা যায়।
  • গ্লাস ইনসার্টসহ মেহগনি দরজা: যারা আধুনিক লুক চান তাদের জন্য মেহগনি কাঠের গ্লাস ইনসার্টসহ দরজা একটি ভালো বিকল্প। এটি ঘরে আলো প্রবেশের সুযোগ দেয় এবং বাড়ির ইন্টেরিয়রে শৈল্পিকতার ছোঁয়া যোগ করে।
  • কাস্টম ডিজাইন: অনেকেই নিজেদের পছন্দ মতো ডিজাইন দিয়ে দরজা তৈরি করেন। মেহগনি কাঠের নমনীয়তা এটি সম্ভব করে তোলে।

মেহগনি কাঠের দরজার দাম নির্ধারণের প্রধান ফ্যাক্টর

মেহগনি কাঠের দরজার দাম নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর। বাংলাদেশে এই দরজার দাম সাধারনত প্রতি বর্গফুট বা সম্পূর্ণ দরজার হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। নিচে দাম নির্ধারণের গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলো আলোচনা করা হলো:

  • দরজার সাইজ এবং মাপ: দরজার আকার অনুযায়ী এর জন্য কাঠের প্রয়োজনীয় পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। বড় দরজার জন্য বেশি কাঠ লাগবে ফলে দামও বেশি হবে। উদাহরণস্বরূপ ৭ ফুট × ৩ ফুট একটি স্ট্যান্ডার্ড সলিড মেহগনি দরজার দাম গড়ে ১৮,০০০ থেকে ২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
  • ডিজাইন এবং কারুকার্যের জটিলতা: জটিল নকশা বা কারুকার্যের দরজা তৈরি করতে সময় এবং দক্ষতার প্রয়োজন হয়। ফলে এর দাম সাধারণত বেশি হয়। একটি খোদাই করা দরজার দাম সাধারণ দরজার তুলনায় ২০%-৩০% বেশি হতে পারে।
  • কাঠের গুণগত মান: মেহগনি কাঠ বিভিন্ন গ্রেডের হতে পারে। উচ্চ মানের মেহগনি কাঠ যা সুনির্বাচিত এবং কম দাগযুক্ত তার দাম তুলনামূলক বেশি।
  • রেডিমেড বনাম কাস্টম-মেড দরজা: রেডিমেড দরজা তুলনামূলকভাবে কম খরচে পাওয়া যায়। তবে কাস্টম-মেড দরজায় আপনাকে কাঠ এবং ডিজাইন পছন্দের সুযোগ থাকে। কাস্টম-মেড দরজার দাম গড়ে ১৫%-২০% বেশি হতে পারে।

বাংলাদেশে মেহগনি কাঠের দরজার বর্তমান বাজারদর

বাংলাদেশে মেহগনি কাঠের দরজার বাজার বেশ প্রতিযোগিতাপূর্ণ। এর দাম নির্ধারণে দরজার সাইজ, কাঠের গুণগত মান এবং ডিজাইনের জটিলতা প্রধান ভূমিকা পালন করে। সাধারণত দরজাগুলোর দাম প্রতি বর্গফুট হিসেব করা হয়।

  • রেডিমেড দরজার দাম: ঢাকা এবং চট্টগ্রামের মতো বড় শহরগুলোতে রেডিমেড মেহগনি দরজার দাম তুলনামূলক কম। একটি ৭ ফুট × ৩ ফুট স্ট্যান্ডার্ড মাপের দরজার দাম গড়ে ১৮,০০০ থেকে ২২,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। কিছু ক্ষেত্রে দাম ২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে যদি দরজার ডিজাইনে বাড়তি কারুকার্য থাকে।
  • কাস্টম-মেড দরজার দাম: যারা কাস্টম ডিজাইন পছন্দ করেন তাদের জন্য মেহগনি দরজার দাম একটু বেশি হয়। সাধারণভাবে, কাস্টম-মেড দরজার দাম ২০,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকার মধ্যে থাকে। কাঠের মান এবং ডিজাইনের জটিলতার ওপর নির্ভর করে এই দাম আরও বাড়তে পারে।
  • বিভিন্ন অঞ্চলে দামের ভিন্নতা: গ্রামাঞ্চলে মেহগনি দরজার দাম তুলনামূলক কম হয়। কারণ স্থানীয়ভাবে পাওয়া মেহগনি কাঠ এবং কম শ্রম খরচ এর একটি বড় কারণ। উদাহরণস্বরূপ সিলেট অঞ্চলে দরজার দাম গড়ে ১৫,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।

মেহগনি কাঠের দরজা বানানোর খরচ

মেহগনি কাঠের দরজা বানানোর খরচ শুধুমাত্র কাঠের মূল্য নির্ধারণের ওপর নির্ভর করে না। এর সঙ্গে শ্রম, আনুষঙ্গিক উপকরণ এবং অন্যান্য কিছু বিষয়ও জড়িত।

  • কাঠের দাম: মেহগনি কাঠের দাম সরাসরি দরজার খরচকে প্রভাবিত করে। গড়ে মেহগনি কাঠের প্রতি সিএফটি (ঘনফুট) দাম ২,৫০০ থেকে ৩,৫০০ টাকা। একটি দরজা বানাতে সাধারণত ৭-১০ সিএফটি কাঠ লাগে যার মূল্য দাঁড়ায় ১৭,৫০০ থেকে ৩৫,০০০ টাকা পর্যন্ত।
  • শ্রম খরচ: দরজার ডিজাইন অনুযায়ী শ্রমিকদের খরচ ভিন্ন হয়। একটি সাধারণ দরজা তৈরি করতে শ্রমিকদের পারিশ্রমিক গড়ে ৫,০০০ থেকে ৭,০০০ টাকা হতে পারে। খোদাই বা বিশেষ নকশার দরজা বানালে এই খরচ বেড়ে ১০,০০০ থেকে ১২,০০০ টাকায় পৌঁছায়।
  • আনুষঙ্গিক খরচ: দরজার হিঞ্জ, হ্যান্ডেল এবং পলিশ করার জন্য প্রয়োজনীয় আনুষঙ্গিক উপকরণের খরচ গড়ে ২,০০০ থেকে ৫,০০০ টাকা হতে পারে। ফলে দরজা বানানোর মোট খরচ কাঠের মান ও আনুষঙ্গিক খরচের ওপর নির্ভর করে প্রায় ২৫,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

আর পড়ুন: কোন গাছ বেশি অক্সিজেন দেয় 

মেহগনি কাঠের দরজা কেনার আগে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন

মেহগনি কাঠের দরজা কেনার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করা প্রয়োজন। এই বিষয়গুলো দরজার স্থায়িত্ব, কার্যকারিতা এবং আপনার বাজেটের ওপর প্রভাব ফেলে।

  • কাঠের গুণগত মান যাচাই: মেহগনি কাঠের আসল বা মানসম্পন্ন কিনা তা যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চ মানের মেহগনি কাঠ সাধারণত ভারী, মসৃণ টেক্সচারযুক্ত এবং রঙে লালচে-বাদামি হয়। বাজারে নিম্ন মানের কাঠ বিক্রির চেষ্টা হতে পারে তাই অভিজ্ঞ ব্যক্তির সহায়তা নিন।
  • বাজেট অনুযায়ী সিদ্ধান্ত: দরজা কেনার আগে নিজের বাজেট নির্ধারণ করুন এবং সেই অনুযায়ী একটি ভালো মানের দরজা কিনুন। রেডিমেড দরজা যদি আপনার বাজেটের মধ্যে থাকে তবে সেটি বিবেচনা করুন। কাস্টম-মেড দরজার জন্য অতিরিক্ত খরচের প্রস্তুতি রাখুন।
  • পরিবেশবান্ধব সোর্স থেকে কেনা: মেহগনি কাঠ পরিবেশবান্ধব উৎস থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করুন। এই কাঠের উৎপাদন প্রক্রিয়া যেন পরিবেশের ক্ষতি না করে সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি।
  • দোকানের রিভিউ যাচাই: বিশ্বস্ত দোকান বা সাপ্লায়ার থেকে দরজা কিনুন। আগে থেকে তাদের রিভিউ দেখে নিশ্চিত হন যে তারা মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ করে।

মেহগনি কাঠের দরজার দাম ও ডিজাইন

মেহগনি কাঠের দরজা কেনার জন্য বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য স্থান

বাংলাদেশে মেহগনি কাঠের দরজা কেনার জন্য কিছু জনপ্রিয় স্থান রয়েছে। এই স্থানগুলোতে মানসম্মত পণ্য এবং প্রতিযোগিতামূলক দাম পাওয়া যায়।

  • ঢাকার ফার্নিচার মার্কেট: ঢাকার হাতিরপুল, ইস্কাটন, এবং আগারগাঁও এলাকার ফার্নিচার মার্কেট মেহগনি কাঠের দরজার জন্য বিখ্যাত। এখানে বিভিন্ন ধরনের রেডিমেড এবং কাস্টম-মেড দরজা পাওয়া যায়।
  • চট্টগ্রাম এবং সিলেট: চট্টগ্রামের বাকলিয়া এবং সিলেটের আখালিয়া এলাকায় মেহগনি দরজার দোকান জনপ্রিয়। এই বাজারগুলোতে দরজার দাম তুলনামূলক কম এবং পছন্দের সুযোগ বেশি।
  • অনলাইন মার্কেটপ্লেস: বাংলাদেশে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যেমন Daraz এবং Bikroy.com এখন মেহগনি দরজার জন্য একটি ভালো উৎস। এখান থেকে আপনি সহজেই দরজা অর্ডার করতে পারেন। তবে অনলাইনে কেনার আগে প্রোডাক্টের বিবরণ এবং বিক্রেতার রিভিউ ভালোভাবে যাচাই করুন।

মেহগনি কাঠের দরজার রক্ষণাবেক্ষণ এবং দীর্ঘস্থায়িত্ব নিশ্চিত করার পদ্ধতি

মেহগনি কাঠের দরজা তার টেকসই গুণাবলীর জন্য পরিচিত হলেও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ দরজার দীর্ঘস্থায়িত্ব নিশ্চিত করে। দরজার রঙ, ফিনিশিং এবং কাঠামো ভালো রাখতে নিচের নির্দেশনা অনুসরণ করুন।

  • নিয়মিত পরিষ্কার করুন: মেহগনি কাঠের দরজা মসৃণ এবং চকচকে রাখতে মাসে অন্তত একবার পরিষ্কার করা উচিত। একটি নরম কাপড় এবং হালকা ডিটারজেন্ট ব্যবহার করে পরিষ্কার করুন। সরাসরি পানি না ঢেলে ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে নিন।
  • পলিশ এবং ফিনিশিং: দরজার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বজায় রাখতে প্রতি দুই থেকে তিন বছর পর পর নতুন করে পলিশ করুন। পলিশ দরজাকে আর্দ্রতা এবং ধুলো থেকে রক্ষা করে।
  • জং প্রতিরোধক হিঞ্জ ব্যবহার করুন: দরজার হিঞ্জ এবং হ্যান্ডেলগুলো যাতে জং না ধরে সেদিকে নজর দিন। হিঞ্জ এবং অন্যান্য ধাতব অংশে নিয়মিত তেল বা লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করলে এগুলো দীর্ঘস্থায়ী হবে।
  • সরাসরি রোদ বা পানি এড়িয়ে চলুন: যদি দরজাটি এমন স্থানে স্থাপন করা হয় যেখানে সরাসরি রোদ পড়ে বা বৃষ্টি লাগে তবে দরজার উপরে ছাউনির ব্যবস্থা করুন। এটি কাঠের রঙ এবং কাঠামো রক্ষা করবে।

আর পড়ুন: বাগান বিলাস ফুল গাছ 

মেহগনি কাঠের দরজার বিকল্প কী

যদিও মেহগনি কাঠ উচ্চমানের এবং দীর্ঘস্থায়ী কিছু ক্ষেত্রে এর দাম বেশি হতে পারে। ফলে অনেকে বিকল্প খোঁজেন। নিচে মেহগনি কাঠের কিছু জনপ্রিয় বিকল্প উল্লেখ করা হলো:

  • সেগুন কাঠ (Teak Wood): সেগুন কাঠও মেহগনির মতোই শক্তিশালী এবং টেকসই। এটি পানিরোধী এবং কীটপতঙ্গ প্রতিরোধী। তবে সেগুন কাঠের দাম মেহগনির তুলনায় প্রায় ২০%-৩০% বেশি।
  • শিমুল কাঠ (Silkwood): শিমুল কাঠ তুলনামূলকভাবে হালকা এবং সস্তা। যদিও এটি মেহগনির মতো টেকসই নয় এটি বাজেট-বান্ধব একটি বিকল্প।
  • অ্যাকাশিয়া কাঠ (Acacia Wood): এই কাঠ শক্ত এবং দৃষ্টিনন্দন। মেহগনির তুলনায় এটি একটু সস্তা হলেও এর টেকসই গুণাবলী প্রায় সমান।
  • কম্পোজিট দরজা: কাঠ এবং অন্যান্য উপাদানের মিশ্রণে তৈরি কম্পোজিট দরজা মেহগনির একটি আধুনিক বিকল্প। এগুলো টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব।

মেহগনি কাঠের দরজার সুবিধা এবং অসুবিধা

মেহগনি কাঠের দরজা কেনার আগে এর সুবিধা এবং অসুবিধাগুলো জানা প্রয়োজন।

সুবিধা:

  • দীর্ঘস্থায়ী: মেহগনি কাঠ খুবই মজবুত এবং দীর্ঘস্থায়ী। এটি সহজে ফাটে না বা বিকৃত হয় না।
  • দৃষ্টিনন্দন: প্রাকৃতিক লালচে-বাদামি রঙ এবং মসৃণ টেক্সচার এটি অন্য কাঠের থেকে আলাদা করে।
  • পরিবেশ প্রতিরোধী: এটি পানি এবং আর্দ্রতা সহ্য করতে পারে।
  • কারুকার্যের উপযোগী: বিভিন্ন ধরণের ডিজাইন সহজেই এতে তৈরি করা যায়।

অসুবিধা:

  • উচ্চ খরচ: মেহগনি কাঠের দরজা তুলনামূলকভাবে দামি।
  • ওজন বেশি: এর উচ্চ ঘনত্বের কারণে দরজাগুলো ভারী হয় যা ইনস্টলেশনে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
  • দুষ্প্রাপ্যতা: মানসম্মত মেহগনি কাঠের সরবরাহ অনেক সময় সীমিত হতে পারে।

মেহগনি কাঠের দরজা কেনার জন্য সেরা পরামর্শ

মেহগনি কাঠের দরজা কেনার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। এই নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করলে আপনি একটি মানসম্মত এবং দীর্ঘস্থায়ী দরজা কিনতে পারবেন।

  • বিশ্বাসযোগ্য সাপ্লায়ার নির্বাচন করুন: বিশ্বস্ত দোকান বা সাপ্লায়ার থেকে দরজা কিনুন। তাদের রিভিউ এবং পূর্ববর্তী কাজ দেখে সিদ্ধান্ত নিন।
  • পছন্দমতো ডিজাইন বেছে নিন: আপনার ঘরের স্টাইল এবং বাজেট অনুযায়ী দরজার ডিজাইন নির্বাচন করুন। কাস্টম ডিজাইন করলে তা আপনার ঘরের সাথে মানানসই হবে।
  • গ্যারান্টি বা ওয়ারেন্টি দেখুন: দরজার গুণমান নিশ্চিত করার জন্য বিক্রেতার কাছ থেকে গ্যারান্টি বা ওয়ারেন্টি নিন। এটি ভবিষ্যতে মেরামতের খরচ বাঁচাতে সাহায্য করবে।
  • কাঠের মান যাচাই করুন: মেহগনি কাঠের আসল গুণাগুণ যাচাই করতে একজন বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিন। নিম্নমানের কাঠ এড়িয়ে চলুন।

আর পড়ুন: কালোজিরা গাছ চাষ পদ্ধতি 

উপসংহার – মেহগনি কাঠের দরজার দাম ও ডিজাইন

মেহগনি কাঠের দরজা তার সৌন্দর্য, টেকসই গুণাবলী এবং আভিজাত্যের জন্য ঘর বা অফিসের জন্য একটি সেরা পছন্দ। বাংলাদেশে এই দরজাগুলো বিভিন্ন ধরণের এবং দামে পাওয়া যায় যা সকল শ্রেণীর মানুষের জন্য সহজলভ্য করে তোলে। দরজা কেনার সময় বাজেট এবং প্রয়োজনীয়তা মাথায় রেখে সঠিক সিদ্ধান্ত নিন। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করলে এই দরজা দীর্ঘ বছর ধরে নতুনের মতো থাকবে।

আপনার ঘরের জন্য সেরা মেহগনি কাঠের দরজা খুঁজছেন? স্থানীয় বাজার বা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে খোঁজ করুন এবং একটি মানসম্মত পণ্য কিনুন। যদি আর্টিকেলটি আপনার উপকারে আসে তবে শেয়ার করতে ভুলবেন না!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *