কাঠের ডাইনিং টেবিলের দাম বাংলাদেশে মান ও মূল্য বিশ্লেষণ

কাঠের ডাইনিং টেবিলের দাম

বাংলাদেশে আসবাবপত্রের বাজারে কাঠের ডাইনিং টেবিল অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি পণ্য। ডাইনিং হলের সৌন্দর্য ও ব্যবহারিকতার জন্য এটি আবশ্যক উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়। এই আর্টিকেলে আমরা বিশদভাবে আলোচনা করব কাঠের ডাইনিং টেবিলের দাম নির্ধারণে প্রভাব ফেলা উপাদান সমূহ ও বিভিন্ন দামের পরিসীমা কীভাবে নির্ধারণ করা হয়। আমরা আলোচনা করব কেন একটি টেবিল কেনা গুরুত্বপূর্ণ এবং বিভিন্ন বাজেটের জন্য কিভাবে সঠিক পছন্দ করা যায়। এছাড়াও আমরা উল্লেখ করব কিছু বাস্তবিক দামের উদাহরণ যা আপনাকে বাজারের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ধারণা দিতে সহায়ক হবে।


পোস্টে যা যা থাকছে...

পরিচিতি – কাঠের ডাইনিং টেবিলের দাম

বাংলাদেশে আসবাবপত্রের বাজার ক্রমাগত উন্নতির সাথে সাথে ক্রেতাদের মধ্যে মানসম্মত ও টেকসই পণ্যের চাহিদা বেড়ে চলেছে। কাঠের ডাইনিং টেবিল শুধু একটি আসবাবপত্র নয় এটি ঘরের সজ্জার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আপনার ডাইনিং হলের শোভা বৃদ্ধি করে এবং পরিবারের মিলনমঞ্চ হিসেবে এর গুরুত্ব অপরিসীম। বাজারে টেবিলের দাম নির্ভর করে ব্যবহৃত কাঠের ধরন ডিজাইন কারিগরী কাজ আকার ও ফিনিশিং এর উপর। এই আর্টিকেলে আমরা দাম সম্পর্কিত বিভিন্ন পরিসীমা নিয়ে আলোচনা করব যেমন স্থানীয় কারিগরের তৈরি বাজেট ফ্রেন্ডলি টেবিল থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক মানের প্রিমিয়াম টেবিলের দাম যা প্রায় ৮০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১,০০,০০০ টাকারও মধ্যে হতে পারে।

আর পড়ুন: কাঠের সিংহাসন দাম ২০২৫ 


কেন নির্বাচন করবেন কাঠের ডাইনিং টেবিল

কাঠের ডাইনিং টেবিল কেনার বেশ কিছু কারণ রয়েছে যা ক্রেতাদের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক। প্রথমত কাঠ প্রাকৃতিক উপকরণ হওয়ার কারণে পরিবেশ বান্ধব এবং টেকসই। বাংলাদেশের আবহাওয়ার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে কাঠের গুণগত মান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় ক্রেতারা হাতে তৈরি টেবিল পছন্দ করেন কারণ এতে প্রতিটি টেবিলে কারিগরী দক্ষতা ও সূক্ষ্ম নকশা থাকে যা যেকোনো আধুনিক বা ট্রাডিশনাল ঘরের সাথে মানানসই হয়।

একটি ভালো কাঠের ডাইনিং টেবিল আপনার ঘরের সাজসজ্জাকে এক নতুন মাত্রা দেয় এবং এটি আপনার পরিবার ও অতিথিদের জন্য আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করে। এছাড়াও কাঠের টেবিলের দাম যখন সঠিকভাবে নির্ধারিত হয় তখন এটি ক্রেতার বিনিয়োগের মূল্যের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত হয়। উদাহরণ স্বরূপ যদি আপনি স্থানীয় কারিগরের তৈরি একটি বাজেট ফ্রেন্ডলি টেবিল বেছে নেন তাহলে এর দাম প্রায় ৮০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকার মধ্যে থাকতে পারে। অপরদিকে প্রিমিয়াম ডিজাইন ও ব্র্যান্ডেড টেবিলের ক্ষেত্রে দাম ৩০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকার মধ্যে যেতে দেখা যায়।


বাংলাদেশের বাজারে কাঠের ডাইনিং টেবিলের দাম অবস্থা

বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলোতে যেমন ঢাকা চট্টগ্রাম এবং সিলেট এ কাঠের ডাইনিং টেবিলের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্থানীয় বাজারে অনেক দোকান রয়েছে যেখানে সহজে সাশ্রয়ী মূল্যের টেবিল পাওয়া যায়। স্থানীয় কারিগরের তৈরি টেবিলের দাম প্রায় ৮০০০ থেকে ২০,০০০ টাকার মধ্যে থাকে। তবে উন্নত ডিজাইন ও উন্নত মানের টেবিল যেমন দেশি বা ইম্পোর্টেড কাঠ ব্যবহার করে তৈরি টেবিলের ক্ষেত্রে দাম ২৫,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকারও মধ্যে হতে পারে।

অনলাইন মার্কেটপ্লেস যেমন দারাজ বিক্রয় ও অন্যান্য ই-কমার্স সাইটেও আপনি বিভিন্ন দাম ও ডিজাইনের টেবিল পেতে পারেন। অনলাইনে রিভিউ ও ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা দেখে আপনি সঠিক পছন্দ করতে পারবেন। অনেক সময় অনলাইন কেনাকাটায় বিশেষ ছাড়ের সুযোগও থাকে যা ক্রেতাদের জন্য মূল্যের তুলনায় বেশ লাভজনক হয়।

বর্তমান বাজারে দুই ধরনের প্রধান ডিজাইন দেখা যায়। একদিকে আছে ট্রাডিশনাল ডিজাইন যেখানে কারুকার্যপূর্ণ নকশা ও প্রাচীন শৈলী ফুটে ওঠে অপরদিকে মডার্ন ডিজাইনে সরলতা ও কার্যকারিতা নিয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়। উদাহরণস্বরূপ একটি মডার্ন ডিজাইনের টেবিলের দাম যদি প্রায় ১৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকার মধ্যে থাকে তবে ট্রাডিশনাল কারিগরি কাজের কারণে কিছু কিছু টেবিলের দাম ৪০,০০০ থেকে ৬০,০০০ টাকা পর্যন্ত উঠতে দেখা যায়।


দাম নির্ধারণে প্রভাব ফেলা উপাদানসমূহ

কাঠের ডাইনিং টেবিলের চূড়ান্ত দাম নির্ধারণে বেশ কিছু উপাদানের ভূমিকা রয়েছে। এদের মধ্যে প্রধান তিনটি উপাদান আছে ব্যবহার করা কাঠের ধরন ডিজাইন ও আকার এবং ফিনিশিং।

ব্যবহৃত কাঠের ধরন

টেবিল তৈরিতে ব্যবহৃত কাঠের ধরন সরাসরি টেবিলের মান ও দাম নির্ধারণ করে। উদাহরণস্বরূপ সাগও কাঠ ব্যবহার করে তৈরি টেবিল সাধারণত বেশ দামি হয় কারণ এই কাঠের গুণগত মান ও টেকসইত্ব বেশি থাকে। একটি সাগও কাঠের টেবিলের দাম প্রায় ৫০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে যদি এটি প্রিমিয়াম ফিনিশিং সহ তৈরি করা হয়।

অন্যদিকে দেশি মেঠি বা দারি কাঠের টেবিল অনেক সময় কম খরচে পাওয়া যায়। স্থানীয় কারিগররা যদি এই কাঠ ব্যবহার করে টেবিল তৈরি করেন তবে এর দাম প্রায় ৮,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকার মধ্যে থাকে। তবে কাঠের ধরন ছাড়াও কাঠের উৎস ও প্রক্রিয়াকরণের পদ্ধতি দাম নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ডিজাইন ও কারিগরী কাজ

টেবিলের ডিজাইন ও কারিগরী কাজও দাম নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। হাতে তৈরি টেবিলের ক্ষেত্রে প্রতিটি কারুকার্য বিশেষ মনোযোগ দিয়ে করা হয় যার ফলে এর দাম বৃদ্ধি পায়। উদাহরণ স্বরূপ একটি কারিগরী কাজ সম্পন্ন হাতে তৈরি টেবিলের দাম প্রায় ৩০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকার মধ্যে থাকতে দেখা যায়।

অন্যদিকে মেশিনে তৈরি টেবিলের ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ কম থাকায় দাম কিছুটা কম হতে পারে। তবে মেশিন উৎপাদিত টেবিলের মধ্যে যদি অতিরিক্ত ডিজাইন বা এক্সট্রা ফিনিশিং থাকে তবে দাম ২০,০০০ থেকে ৪০,০০০ টাকার মধ্যে যেতে পারে। ডিজাইনের জটিলতা এবং ব্যবহৃত উপকরণের মান অনুযায়ী এই দাম পরিবর্তিত হয়।

আকার ও ফিনিশিং

টেবিলের আকারও তার চূড়ান্ত মূল্যের উপর প্রভাব ফেলে। ছোট আকারের টেবিল যেমন ১.২ মিটার বা ১.৫ মিটার দৈর্ঘ্যের টেবিলের দাম প্রায় ৮,০০০ থেকে ২৫,০০০ টাকার মধ্যে থাকতে পারে। বড় আকারের টেবিল যেমন ২ মিটার বা তার বেশি দৈর্ঘ্যের টেবিলের ক্ষেত্রে দাম ৩০,০০০ থেকে ৬০,০০০ টাকার মধ্যে দেখা যায়।

ফিনিশিং এর মান যেমন পলিশিং পেইন্টিং বা ওয়াক্সিং এর উপরে ভিত্তি করে টেবিলের চূড়ান্ত দাম নির্ধারিত হয়। উন্নত মানের ফিনিশিং সহ একটি টেবিলের দাম সাধারণত প্রায় ২০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকার মধ্যে থাকতে দেখা যায়। ফিনিশিং এর কাজ যত বেশি সূক্ষ্ম ও মনোযোগপূর্ণ হবে ততই দাম বৃদ্ধি পাবে।


দাম নির্ধারণের প্রক্রিয়া

কাঠের ডাইনিং টেবিলের দাম নির্ধারণের প্রক্রিয়ায় উৎপাদন খরচ সরবরাহ চেইন ডিজাইন ও বাজারে চাহিদার সমন্বয় থাকে। প্রথমেই কাঠ সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণে যে খরচ আসে তা মূল্যের একটি বড় অংশ নির্ধারণ করে। উদাহরণস্বরূপ স্থানীয় কাঠের ক্ষেত্রে প্রায় ৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে খরচ হতে পারে যা পরবর্তীতে টেবিলের চূড়ান্ত মূল্যে প্রতিফলিত হয়।

এরপর কারিগরের মজুরি ও কারিগরী কাজের খরচ যুক্ত হয়। যদি কারিগরের হাতে তৈরি টেবিলের ক্ষেত্রে প্রতিটি ইউনিটে মজুরি ১০০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত যোগ হয় তাহলে এর দাম বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও উৎপাদনের সময় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি সরবরাহ খরচ পরিবহন ও বিপণন খরচও এই মূল্য নির্ধারণে প্রভাব ফেলে।

উদাহরণস্বরূপ একটি মাঝারি বাজেটের টেবিলের ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা হতে পারে এবং বিপণন ও পরিবহন খরচ প্রায় ২০০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত যুক্ত হলে চূড়ান্ত মূল্য প্রায় ১৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকার মধ্যে থাকতে দেখা যায়। আবার একটি প্রিমিয়াম টেবিলের ক্ষেত্রে উৎপাদন ও ফিনিশিং খরচ মিলিয়ে দাম ৫০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকারও মধ্যে যেতে পারে।


বিভিন্ন বাজেটে কাঠের ডাইনিং টেবিলের অপশন

বাংলাদেশের ক্রেতাদের বাজেট অনুযায়ী বিভিন্ন ধরণের টেবিল পাওয়া যায়। এখানে আমরা তিনটি বিভাগে ভাগ করে দিচ্ছি।

বাজেট-ফ্রেন্ডলি বিকল্প

কম বাজেটের ক্রেতাদের জন্য স্থানীয় কারিগরের তৈরি টেবিল অন্যতম উপায় হয়ে থাকে। এ ধরনের টেবিলের মধ্যে ব্যবহৃত কাঠ সাধারণত স্থানীয় উত্স থেকে সংগ্রহ করা হয় যার ফলে উৎপাদনের খরচ কম থাকে। এ ক্ষেত্রে একটি সাধারণ ডিজাইন ও বেসিক ফিনিশিং থাকে যার ফলে দাম প্রায় ৮০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকার মধ্যে থাকে। এই টেবিলগুলো দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত এবং স্থানীয় বাজারে সহজেই পাওয়া যায়।

মিড-রেঞ্জ বিকল্প

মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের জন্য উন্নত ডিজাইন ও ভাল মানের ফিনিশিং সহ টেবিল একটি জনপ্রিয় বিকল্প হয়ে উঠেছে। মিড-রেঞ্জ টেবিলগুলোতে সাধারণত উন্নত কাঠের মান ব্যবহার করা হয় এবং কারিগরী কাজেও কিছুটা সূক্ষ্মতা থাকে। এই ধরণের টেবিলের দাম প্রায় ১৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকার মধ্যে থাকে। মিড-রেঞ্জ টেবিল ক্রেতারা যদি আধুনিক ডিজাইন ও কার্যকর ফাংশনালিটির সাথে সাথে একটু বেশি দামের পণ্য চান তাহলে এই বিকল্পটি তাদের জন্য উপযুক্ত।

প্রিমিয়াম সেগমেন্ট

প্রিমিয়াম সেগমেন্টে এমন টেবিল পাওয়া যায় যা কাস্টম ডিজাইন এক্সক্লুসিভ ফিনিশিং ও উচ্চমানের কাঠের ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। এই ধরণের টেবিল ক্রেতারা যারা বিশেষ কিছু চান এবং যাদের বাজেট বেশি তাদের জন্য তৈরি করা হয়। প্রিমিয়াম টেবিলের ক্ষেত্রে দাম প্রায় ৩০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকার মধ্যে হতে দেখা যায়। এখানে কারিগরী কাজের সূক্ষ্মতা এবং কাস্টমাইজেশনের কারণে ক্রেতারা অতিরিক্ত মূল্য পরিশোধ করতে রাজি থাকেন।

আর পড়ুন: কাঠের চেয়ার দাম 


কেনার পূর্বে বিবেচ্য বিষয়

কাঠের ডাইনিং টেবিল কেনার পূর্বে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। প্রথমে আপনাকে আপনার ঘরের আকার ও বিন্যাস বিবেচনা করতে হবে। যদি আপনার ঘর ছোট হয় তাহলে ছোট আকারের টেবিল বেছে নিন যার দাম প্রায় ৮,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকার মধ্যে থাকে। অন্যদিকে বড় ডাইনিং হলের জন্য বড় আকারের টেবিল প্রয়োজন হতে পারে যার দাম ৩০,০০০ থেকে ৬০,০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে।

টেবিলের ডিজাইন ফিনিশিং ব্যবহৃত কাঠের ধরন ও কারিগরী কাজ ভালোভাবে যাচাই করা প্রয়োজন। কেনার পূর্বে দোকান বা কারিগরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে টেবিলের নমুনা দেখে নিন। অনলাইনে কেনাকাটা করার সময় রিভিউ ও ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা ভালভাবে পড়ে নিন। এছাড়াও ওয়ারেন্টি পরবর্তী সেবা ও রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টি মাথায় রাখুন যাতে ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা না হয়।

অনেক সময় ক্রেতারা কাস্টম মডেল অর্ডারের মাধ্যমে তাদের নিজস্ব স্বাদের টেবিল তৈরি করান। এতে করে আপনি টেবিলের ডিজাইন মাপ রঙ এবং অতিরিক্ত ফিচার নির্ধারণ করতে পারেন যা আপনার ঘরের সজ্জার সাথে পুরোপুরি খাপ খায়। এমন ক্ষেত্রে দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে যেমন ২০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকার অতিরিক্ত খরচও যুক্ত হতে দেখা যায়।

কাঠের ডাইনিং টেবিল


বাংলাদেশে টেবিলের বাজারে প্রাপ্যতা

বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে যেমন ঢাকা চট্টগ্রাম সিলেট ও রাজশাহী তে কাঠের আসবাবপত্রের দোকান ও শোরুম পাওয়া যায়। স্থানীয় দোকানগুলোর পাশাপাশি অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ও বেশিরভাগ সময় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের টেবিল পাওয়া যায়। অনলাইনে কেনাকাটা করলে বিভিন্ন বিকল্পের তুলনা করে সহজেই সাশ্রয়ী মূল্যের টেবিল পাওয়া যায়।

উদাহরণস্বরূপ অনলাইনে আপনি যদি স্থানীয় কারিগরের তৈরি টেবিলের সন্ধান করেন তাহলে এর দাম প্রায় ৮,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। অপরদিকে আন্তর্জাতিক মানের বা প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের টেবিলের ক্ষেত্রে দাম ৩০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকার মধ্যে হতে দেখা যায়। অনলাইনে ক্রেতারা রিভিউ পড়ে টেবিলের স্থায়িত্ব ব্যবহারিকতা ও কারিগরী দক্ষতা যাচাই করে নেন।


কাস্টমাইজেশন ও ডিজাইনের ধরণ

আজকের দিনে ক্রেতারা কেবল পূর্বনির্ধারিত ডিজাইন পছন্দ করেন না বরং তারা তাদের নিজস্ব স্বাদের টেবিলও অর্ডার করেন। কাস্টমাইজেশনের মাধ্যমে আপনি টেবিলের ডিজাইন মাপ রঙ ও ফিনিশিং নির্ধারণ করতে পারেন যা আপনার ঘরের সাথে পুরোপুরি খাপ খায়।

উদাহরণস্বরূপ যদি আপনি একটি কাস্টমাইজড টেবিল অর্ডার করেন তাহলে সাধারণত এর দাম ২০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকার অতিরিক্ত খরচ যুক্ত হতে পারে যদি আপনি বিশেষ ডিজাইন বা অতিরিক্ত ফিচার চান। অনেক কারিগর আপনার নির্দিষ্ট অনুরোধ অনুযায়ী টেবিল তৈরি করেন এবং এতে ক্রেতার ব্যক্তিগত স্বাদের ছাপ পড়ে। কাস্টমাইজেশনের ফলে আপনি একটি অনন্য পণ্য পান যা অন্য কোথাও সহজেই পাওয়া যায় না।


টেবিলের রক্ষণাবেক্ষণ ও যত্ন

একটি কাঠের ডাইনিং টেবিলের স্থায়িত্ব ও মান বজায় রাখতে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। টেবিলের দীর্ঘায়ু নিশ্চিত করতে নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন যাতে ধুলো ময়লা জমে না থাকে। নরম কাপড় ও হালকা সাবান দিয়ে মৃদু করে মুছুন যাতে টেবিলের ফিনিশিং ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

টেবিলকে অতিরিক্ত আর্দ্রতা ও তাপ থেকে দূরে রাখুন কারণ এর ফলে কাঠ ফেটে যেতে পারে। মাঝে মাঝে বিশেষ কাঠের পলিশ বা ওয়াক্স ব্যবহার করুন যাতে টেবিলের শাইন ও সুরক্ষা বৃদ্ধি পায়। রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে প্রায় ৬ মাসে একবার পলিশিং করিয়ে নিতে পারেন যা টেবিলের আয়ুষ্কাল বাড়িয়ে দেয়।

সঠিক যত্ন নিলে আপনার টেবিলের মূল্য অনেক দিন অক্ষুণ্ণ থাকবে এবং এর কার্যকারিতা ও সৌন্দর্য বজায় থাকবে।


কাঠের ডাইনিং টেবিলের দাম – ক্রেতাদের অভিজ্ঞতা ও রিভিউ

বাংলাদেশে কাঠের ডাইনিং টেবিল কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের অভিজ্ঞতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনলাইনে বিভিন্ন শপিং প্ল্যাটফর্মে ক্রেতারা টেবিলের স্থায়িত্ব কারিগরী কাজ ও ব্যবহারের সুবিধা নিয়ে মতামত প্রদান করেন। কিছু ক্রেতা জানিয়েছেন যে স্থানীয় কারিগরের তৈরি টেবিলের ক্ষেত্রে কারুকার্যপূর্ণ নকশা থাকলেও কখনও কখনও ফিনিশিং এর অভাব লক্ষ্য করা যায় এবং এর দাম প্রায় ১০,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকার মধ্যে হলেও কিছু ক্ষেত্রে উন্নত ফিনিশিং সহ টেবিলের দাম ৩০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকার মধ্যে উঠতে দেখা গেছে।

অন্যদিকে প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের টেবিল ক্রেতারা যখন কিনেন তখন তারা বেশ সন্তুষ্ট থাকেন কারণ এই টেবিলগুলোতে উন্নত ফিনিশিং কাস্টমাইজেশন ও售পরবর্তী সেবার ব্যবস্থা থাকে। অনেক ক্রেতা তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন যা নতুন ক্রেতাদের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য গাইড হিসেবে কাজ করে।


বাংলাদেশের সফল ব্র্যান্ড ও কেস স্টাডি

বাংলাদেশের আসবাবপত্রের বাজারে কিছু সফল ব্র্যান্ড রয়েছে যারা কাঠের ডাইনিং টেবিলের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছেন। উদাহরণস্বরূপ একটি স্থানীয় ব্র্যান্ড আছে যারা স্থানীয় কাঠ ব্যবহার করে প্রাকৃতিক ডিজাইনের টেবিল তৈরি করে। এদের টেবিলের দাম সাধারণত ১২,০০০ থেকে ২৫,০০০ টাকার মধ্যে থাকে এবং ক্রেতারা এর টেকসইত্ব ও কারিগরী কাজ নিয়ে সন্তুষ্ট হন।

আরেকটি উদাহরণ হিসেবে আন্তর্জাতিক মানের আসবাবপত্র সরবরাহকারী ব্র্যান্ডগুলোর কথা বলা যায়। এদের টেবিলের ক্ষেত্রে উন্নত ফিনিশিং কাস্টমাইজেশন ও পরবর্তী সেবার কারণে দাম ৩০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকার মধ্যে হতে দেখা যায়। একটি কেস স্টাডিতে এক মাঝারি আয়ের পরিবার তাদের ডাইনিং হল সাজানোর জন্য কাস্টম টেবিল অর্ডার করে যার দাম প্রায় ৪৫,০০০ টাকা ছিল। টেবিলটি তৈরির সময় কারিগর ঘরের আকার ডিজাইন ও ব্যক্তিগত স্বাদের কথা মাথায় রেখে কাজ করেন যা ক্রেতাদের অত্যন্ত পছন্দ হয়।


অনলাইন বনাম অফলাইন কেনাকাটা

বাংলাদেশে আসবাবপত্র কেনার ক্ষেত্রে অনলাইন ও অফলাইন দুইটি পদ্ধতি প্রচলিত। অনলাইনে কেনাকাটা করলে বিভিন্ন দোকান ও ব্র্যান্ডের তুলনা সহজে করা যায়। অনলাইন শপিং সাইটে আপনি স্থানীয় কারিগরের তৈরি টেবিলের ক্ষেত্রে দাম প্রায় ৮,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকার মধ্যে খুঁজে পাবেন আবার উন্নত ডিজাইন ও প্রিমিয়াম টেবিলের ক্ষেত্রে দাম ৩০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকার মধ্যে হতে দেখা যায়। অনলাইনে ক্রেতারা রিভিউ ও ব্যবহারকারীদের মতামত দেখে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

অপরদিকে সরাসরি দোকানে গিয়ে টেবিলটি স্পর্শ ও পরীক্ষা করে দেখা গেলে আপনি কারিগরের দক্ষতা ও টেবিলের নকশা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারবেন। অফলাইন কেনাকাটায় কখনও কখনও দাম অনলাইনের তুলনায় কিছুটা বেশি হতে পারে কারণ দোকানের খরচ পরিবহন ও বিপণনের উপর ভিত্তি করে দাম নির্ধারণ করা হয়। তবে সরাসরি দেখা হলে আপনি টেবিলের ফিনিশিং ও কারিগরী কাজের সূক্ষ্মতা ভালভাবে বুঝতে পারবেন।


কাঠের ডাইনিং টেবিলের দাম ভবিষ্যতের বাজার প্রবণতা

বাংলাদেশে আসবাবপত্রের বাজার ক্রমাগত পরিবর্তনের সাথে সাথে কাঠের ডাইনিং টেবিলের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন প্রযুক্তি ডিজাইন ও ক্রেতাদের ব্যক্তিগত চাহিদা মিলিয়ে ভবিষ্যতে টেবিলের মান আরও উন্নত হবে বলে আশা করা যায়। কাস্টমাইজেশনের মাধ্যমে ক্রেতারা যদি তাদের নিজস্ব ডিজাইন চয়ন করেন তবে টেবিলের দামও অনুরূপভাবে পরিবর্তিত হবে। উদাহরণস্বরূপ ভবিষ্যতে যদি কারিগর উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করে ডিজাইন করেন তাহলে উৎপাদন খরচ কমে আসবে এবং দাম তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী হবে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মানের টেবিলের ক্ষেত্রে ক্রেতারা উচ্চ মানের ফিনিশিং ও售পরবর্তী সেবার জন্য অতিরিক্ত মূল্য পরিশোধ করতে রাজি থাকবেন।

বর্তমান বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়ার সাথে সাথে দাম নির্ধারণে স্বচ্ছতা আসবে বলে আশা করা যায়। ক্রেতারা সহজেই বিভিন্ন বিকল্পের মধ্যে তুলনা করতে পারবেন এবং তাদের বাজেট ও প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক পণ্য বেছে নিতে পারবেন।

আর পড়ুন: কাঠের দরজার দাম 


উপসংহার – কাঠের ডাইনিং টেবিলের দাম

এই আর্টিকেলে আমরা বিশদভাবে আলোচনা করেছি বাংলাদেশের বাজারে কাঠের ডাইনিং টেবিলের দাম নির্ধারণে প্রভাব ফেলা উপাদান সমূহ ও বিভিন্ন দামের পরিসীমা। ব্যবহৃত কাঠের ধরন ডিজাইন কারিগরী কাজ আকার ও ফিনিশিং – এই সব উপাদানের সমন্বয়ে একটি টেবিলের চূড়ান্ত মূল্য নির্ধারণ করা হয়। স্থানীয় কারিগরের তৈরি বাজেট ফ্রেন্ডলি টেবিলের ক্ষেত্রে দাম প্রায় ৮০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা থেকে শুরু করে উন্নত ডিজাইন ও ফিনিশিং সহ মিড-রেঞ্জ টেবিলের ক্ষেত্রে দাম প্রায় ১৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকা পর্যন্ত এবং প্রিমিয়াম সেগমেন্টে ৩০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকার মধ্যে পরিবর্তিত হয়।

টেবিল কেনার পূর্বে আপনাকে অবশ্যই আপনার ঘরের আকার ডিজাইন ও বাজেট অনুযায়ী পছন্দ করতে হবে। অনলাইনে বা অফলাইনে কেনাকাটা করার সময় ক্রেতাদের রিভিউ পড়ে টেবিলের মান ও স্থায়িত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া জরুরি। সঠিক তথ্য সংগ্রহ ও কারিগরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে আপনি আপনার জন্য উপযুক্ত টেবিল বেছে নিতে পারবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *