কাঠের চেয়ার দাম ২০২৫ – নতুন ডিজাইন ও বাজার মূল্য জানুন

কাঠের চেয়ার দাম

কাঠের চেয়ার আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য আসবাবের একটি। ঘর থেকে অফিস, রেস্টুরেন্ট থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান—প্রায় সব জায়গায় কাঠের চেয়ারের ব্যবহার দেখা যায়। বাংলাদেশে কাঠের চেয়ারের জনপ্রিয়তার প্রধান কারণ হলো এর শক্তপোক্ত গঠন, দীর্ঘস্থায়ীতা এবং নান্দনিক ডিজাইন। তবে কাঠের চেয়ারের দাম বিভিন্ন উপাদানের ওপর নির্ভর করে যেমন কাঠের ধরন, কারিগরির মান, ডিজাইন এবং ব্র্যান্ড।

এই নিবন্ধে, কাঠের চেয়ারের বিভিন্ন ধরন, দাম নির্ধারণের উপাদান, জনপ্রিয় মডেল ও বাজারদর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশি বাজারের ওপর ভিত্তি করে তথ্য উপস্থাপন করা হবে যাতে একজন ক্রেতা কাঠের চেয়ার কেনার সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

কাঠের চেয়ারের জনপ্রিয়তা ও ব্যবহার

বাংলাদেশে কাঠের চেয়ারের চাহিদা বরাবরই বেশি। প্লাস্টিক বা ধাতব চেয়ারের তুলনায় কাঠের চেয়ার বেশি টেকসই এবং দেখতে আকর্ষণীয়। এছাড়া কাঠের চেয়ার সহজেই বিভিন্ন ডিজাইনে তৈরি করা যায়, যা একে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে।

আর পড়ুন: কাঠের দরজার দাম 

বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাঠের চেয়ারের ব্যবহার:

  • বাড়িতে: বসার ঘর, খাবার ঘর, বারান্দা এবং পড়ার টেবিলের সঙ্গে কাঠের চেয়ারের ব্যবহার ব্যাপক।
  • অফিসে: কর্মক্ষেত্রে আরামদায়ক বসার জন্য কাঠের চেয়ারের চাহিদা বেশি।
  • রেস্টুরেন্ট ও ক্যাফে: কাঠের চেয়ার পরিবেশকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে এবং দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহার উপযোগী।
  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত কাঠের বেঞ্চ ও চেয়ার ব্যবহৃত হয়।

বর্তমানে ডিজাইনের বৈচিত্র্য এবং নতুন নতুন উপকরণের সংযোজনের কারণে কাঠের চেয়ারের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কাঠের চেয়ারের দাম নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর

একটি কাঠের চেয়ারের দাম নির্ধারণে বেশ কয়েকটি বিষয় কাজ করে। নীচে এই বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

কাঠের ধরন: কাঠের চেয়ারের দাম অনেকাংশে নির্ভর করে এতে ব্যবহৃত কাঠের গুণমানের ওপর। বাংলাদেশে কাঠের চেয়ার তৈরিতে ব্যবহৃত কিছু জনপ্রিয় কাঠ ও তাদের দাম নীচে উল্লেখ করা হলো:

কাঠের নাম গুণগত মান গড় দাম (প্রতি ঘনফুট)

  • সেগুন কাঠ অত্যন্ত টেকসই। পানি ও পোকামাকড় প্রতিরোধী ৫,০০০-৮,০০০ টাকা
  • গামারি কাঠ মাঝারি মানের, ফিনিশিং ভালো হয় ২,৫০০-৪,০০০ টাকা
  • রেইনট্রি কাঠ হালকা ওজনের, কিন্তু দেখতে আকর্ষণীয় ১,৫০০-৩,০০০ টাকা
  • মহগনি কাঠ টেকসই, ফার্নিচার তৈরিতে জনপ্রিয় ২,০০০-৩,৫০০ টাকা
  • রাবার কাঠ কমদামি সাধারণ ব্যবহারের জন্য ভালো ১,০০০-২,৫০০ টাকা

ডিজাইন ও কারিগরির মান: একটি সাধারণ ডিজাইনের কাঠের চেয়ার ও কারুকার্য খচিত চেয়ারের মধ্যে মূল্য পার্থক্য থাকে। কারুকার্য করা কাঠের চেয়ার সাধারণত বেশি দামের হয়ে থাকে।

ব্র্যান্ড বনাম স্থানীয় প্রস্তুতকারক: ব্র্যান্ডেড ফার্নিচার কোম্পানির কাঠের চেয়ার স্থানীয় দোকানের চেয়ারের তুলনায় বেশি দামের হয় কারণ এতে উন্নতমানের ফিনিশিং এবং গ্যারান্টি সুবিধা থাকে।

বাজার চাহিদা ও সরবরাহ: বিভিন্ন ঋতুতে কাঠের চেয়ারের দাম ওঠানামা করে। বিশেষ করে ঈদ, পূজা বা নববর্ষের সময় ফার্নিচারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম কিছুটা বাড়তে পারে।

বাংলাদেশে কাঠের চেয়ারের গড় বাজারদর

বাংলাদেশে কাঠের চেয়ারের বাজার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে দাম স্থানভেদে পরিবর্তিত হয়। ঢাকায় ব্র্যান্ডেড কাঠের চেয়ারের দাম তুলনামূলক বেশি অন্যদিকে স্থানীয় বাজারে কিছুটা কম পাওয়া যায়।

ঢাকা ও অন্যান্য শহরে কাঠের চেয়ারের গড় দাম:

চেয়ারের ধরন দাম (টাকা)

  • সাধারণ কাঠের চেয়ার ২,০০০-৫,০০০
  • অফিসিয়াল কাঠের চেয়ার ৫,০০০-১৫,০০০
  • ডাইনিং কাঠের চেয়ার (প্রতি পিস) ৩,০০০-৮,০০০
  • হাতলযুক্ত কাঠের চেয়ার ৪,০০০-১০,০০০
  • নকশা করা বা খোদাই করা কাঠের চেয়ার ৮,০০০-২০,০০০

অনলাইন মার্কেটপ্লেস (Daraz, Pickaboo, Othoba) এবং স্থানীয় ফার্নিচার শোরুমে কিছু মূল্য পার্থক্য দেখা যায়।

নতুন কাঠের চেয়ার দাম

নতুন কাঠের চেয়ার কেনার সময় মূল্য নির্ধারণে কিছু বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে কাঠের মান, ডিজাইন এবং নির্মাণশৈলীর ওপর দাম নির্ভর করে। নতুন চেয়ার কিনতে গেলে নিম্নলিখিত দামের ব্যাপারে ধারণা থাকা দরকার:

  • সাধারণ কাঠের চেয়ার: ২,০০০-৫,০০০ টাকা
  • উন্নত মানের কাঠের ডাইনিং চেয়ার: ৫,০০০-১২,০০০ টাকা
  • অফিসের জন্য আরামদায়ক কাঠের চেয়ার: ৬,০০০-১৫,০০০ টাকা
  • বৈঠকখানার ডিজাইনার কাঠের চেয়ার: ১০,০০০-২৫,০০০ টাকা

বাজার গবেষণা অনুযায়ী সেগুন কাঠের চেয়ার সাধারণত বেশি দামের হয় কারণ এটি দীর্ঘস্থায়ী এবং পোকামাকড় প্রতিরোধী। অন্যদিকে মহগনি বা গামারি কাঠের চেয়ার তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যায়।

পুরাতন কাঠের চেয়ারের দাম ও কেনার পরামর্শ

বাংলাদেশের বাজারে নতুন কাঠের চেয়ারের পাশাপাশি পুরাতন কাঠের চেয়ারেরও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। অনেকেই স্বল্প খরচে ভালো মানের চেয়ার কেনার জন্য পুরাতন বা সেকেন্ড হ্যান্ড কাঠের চেয়ার খুঁজে থাকেন। পুরাতন কাঠের চেয়ারের দাম নির্ভর করে কাঠের মান, ব্যবহারের সময়কাল, ডিজাইন এবং অবস্থার ওপর।

সাধারণত সেগুন কাঠের পুরাতন চেয়ারগুলোর মূল্য কমে গেলেও এগুলো বেশ টেকসই হয় এবং নতুন করে পালিশ করালে একদম নতুনের মতো দেখায়। ঢাকার বিভিন্ন পুরাতন আসবাবের মার্কেট যেমন সদরঘাট, বনানী এবং মিরপুর ফার্নিচার মার্কেটে পুরাতন কাঠের চেয়ার বিক্রি হয়। এ ছাড়া অনলাইন মার্কেটপ্লেস যেমন Bikroy.com বা Facebook Marketplace-এও অনেক ভালো মানের পুরাতন চেয়ার পাওয়া যায়।

পুরাতন কাঠের চেয়ারের দাম সাধারণত ১,৫০০ থেকে ১০,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে, তবে কারুকাজ খচিত বা বিশেষ ডিজাইনের চেয়ারের দাম আরও বেশি হতে পারে। কেনার সময় অবশ্যই কাঠের গুণমান, চেয়ারের কাঠামো এবং ক্ষয় বা পোকার আক্রমণ আছে কিনা তা ভালোভাবে যাচাই করা উচিত।

বিভিন্ন কাঠের উপর ভিত্তি করে চেয়ারের দাম

কাঠের চেয়ারের দাম নির্ধারণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো কাঠের ধরণ। বাংলাদেশে প্রধানত সেগুন, মহগনি, রেইনট্রি, গামারি, রাবার কাঠ ইত্যাদি থেকে চেয়ার তৈরি করা হয়।

সেগুন কাঠের চেয়ার সবচেয়ে বেশি দামি এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়। এ ধরনের চেয়ারের দাম শুরু হয় প্রায় ৮,০০০ টাকা থেকে এবং নকশা বা অতিরিক্ত কারুকাজ থাকলে তা ২০,০০০ টাকার ওপরে চলে যেতে পারে। মহগনি কাঠের চেয়ার তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যায় এবং এর গড় মূল্য ৩,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকার মধ্যে থাকে।

গামারি ও রেইনট্রি কাঠের চেয়ার সাধারণত মাঝারি মানের এবং এদের দাম ২,৫০০ থেকে ৭,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। অন্যদিকে, রাবার কাঠের তৈরি চেয়ার সবচেয়ে সস্তা এবং এগুলো ১,৫০০ থেকে ৫,০০০ টাকার মধ্যে কেনা যায়। দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে কাঠের ধরন ছাড়াও চেয়ারের কাঠামো, ডিজাইন এবং প্রস্তুতকারকের ভূমিকা রয়েছে।

আর পড়ুন: আপাং গাছ 

ডিজাইন ও কারুকাজ অনুযায়ী কাঠের চেয়ারের দাম

কাঠের চেয়ারের ডিজাইন এবং কারুকাজ এর মূল্যের ক্ষেত্রে বড় প্রভাব ফেলে। সাধারণ কাঠের চেয়ারগুলো কম দামে পাওয়া গেলেও জটিল নকশা বা খোদাই করা কাঠের চেয়ারের দাম তুলনামূলক বেশি হয়।

বাংলাদেশে বিশেষ করে ঐতিহ্যবাহী খোদাই করা কাঠের চেয়ারগুলোর চাহিদা বেশি। হাতের কারুকাজ করা চেয়ার সাধারণত ৮,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে বিশেষ করে যদি সেগুন কাঠের তৈরি হয়। অন্যদিকে মেশিনের মাধ্যমে তৈরি সাধারণ ডিজাইনের কাঠের চেয়ার তুলনামূলকভাবে কম দামে পাওয়া যায় এবং এগুলোর দাম ২,৫০০ থেকে ৬,০০০ টাকার মধ্যে থাকে।

বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট বা অফিসের জন্য তৈরি করা নির্দিষ্ট ডিজাইনের কাঠের চেয়ারগুলোর দামও কিছুটা বেশি হয়ে থাকে। আধুনিক বা মিনিমালিস্ট ডিজাইনের কাঠের চেয়ার যা বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়। তাদের মূল্য ৪,০০০ থেকে ১২,০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে।

কাঠের চেয়ার

অফিস ও রেস্টুরেন্টের কাঠের চেয়ারের দাম

অফিস এবং রেস্টুরেন্টের জন্য কাঠের চেয়ার সাধারণ গৃহস্থালির চেয়ারের তুলনায় আলাদা ডিজাইনে তৈরি করা হয়। অফিসের জন্য কাঠের চেয়ার তৈরি করা হয় আরামদায়ক এবং দীর্ঘ সময় বসে কাজ করার উপযোগী করে। এ ধরনের চেয়ারের দাম সাধারণত ৫,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকার মধ্যে হয়। চামড়া বা কুশনযুক্ত কাঠের অফিস চেয়ারের দাম আরও বেশি হতে পারে যা ১০,০০০ থেকে ২৫,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।

রেস্টুরেন্টের জন্য কাঠের চেয়ার সাধারণত নকশা ও ফিনিশিংয়ের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়। রেস্টুরেন্ট মালিকরা সাধারণত এমন চেয়ার পছন্দ করেন যা দেখতে আকর্ষণীয়, টেকসই এবং সহজে পরিস্কার করা যায়। বাংলাদেশে রেস্টুরেন্টের কাঠের চেয়ারের দাম ৩,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকার মধ্যে থাকে, তবে উচ্চমানের ডিজাইনের ক্ষেত্রে এটি ১৫,০০০ টাকারও বেশি হতে পারে।

হাতলযুক্ত বনাম হাতলবিহীন কাঠের চেয়ারের দাম

কাঠের চেয়ারের একটি বড় বৈচিত্র্য হলো হাতলযুক্ত এবং হাতলবিহীন চেয়ার। সাধারণত হাতলবিহীন কাঠের চেয়ারগুলো বেশি জনপ্রিয় কারণ এগুলো সহজে বহনযোগ্য এবং তুলনামূলকভাবে কম জায়গা নেয়। হাতলবিহীন কাঠের চেয়ারের দাম সাধারণত ২,৫০০ থেকে ৭,০০০ টাকার মধ্যে থাকে।

অন্যদিকে হাতলযুক্ত কাঠের চেয়ার বেশি আরামদায়ক এবং সাধারণত অফিস, ডাইনিং এবং বৈঠকখানার জন্য ব্যবহৃত হয়। এসব চেয়ার সেগুন, মহগনি, গামারি বা রেইনট্রি কাঠ দিয়ে তৈরি হতে পারে এবং সাধারণত ৪,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।

নকশা ও কারুকার্যের ওপর নির্ভর করে হাতলযুক্ত চেয়ারের দাম আরও বেশি হতে পারে। বিশেষ করে রাজকীয় নকশার চেয়ার বা দোলানো কাঠের চেয়ারের দাম ২০,০০০ টাকার ওপরে চলে যেতে পারে। তাই ক্রেতাদের উচিত তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত চেয়ার বেছে নেওয়া।

ডাইনিং চেয়ারের দাম ও বৈশিষ্ট্য

ডাইনিং রুম সাজানোর সময় কাঠের ডাইনিং চেয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই চেয়ারগুলো সাধারণত শক্ত কাঠ দিয়ে তৈরি হয় যেন দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করা যায়। বাংলাদেশে কাঠের ডাইনিং চেয়ারের দাম মূলত নির্ভর করে কাঠের মান, চেয়ারের সংখ্যা এবং ডিজাইনের ওপর। একটি সাধারণ ছয় চেয়ারের ডাইনিং সেটের দাম ১৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। তবে উচ্চমানের সেগুন কাঠের সেটের জন্য এই দাম বেড়ে ৫০,০০০ টাকা বা তারও বেশি হতে পারে।

ডাইনিং চেয়ারের ডিজাইনে সাধারণত সিম্পল থেকে শুরু করে ভিক্টোরিয়ান স্টাইলের কারুকার্য লক্ষ্য করা যায়। যদি চেয়ারের সঙ্গে কুশন বা চামড়া সংযুক্ত থাকে তবে এর দাম আরও বাড়তে পারে। এ ছাড়া কিছু ডাইনিং চেয়ার এমনভাবে ডিজাইন করা হয় যাতে তা ভাঁজ করা যায় বা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায় যেমন স্টোরেজ সুবিধাসহ। এসব চেয়ারের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি, প্রায় ২০,০০০ থেকে ৪০,০০০ টাকার মধ্যে।

কাঠের সোফা চেয়ার বনাম সাধারণ কাঠের চেয়ার

কাঠের সোফা চেয়ার এবং সাধারণ কাঠের চেয়ারের মধ্যে মূল পার্থক্য হলো আরাম এবং ডিজাইন। কাঠের সোফা চেয়ারে সাধারণত নরম কুশন ও প্যাডিং থাকে যা বসার সময় বেশি আরাম দেয়। এ ধরনের চেয়ারের দাম শুরু হয় ১০,০০০ টাকা থেকে এবং উন্নত মানের ক্ষেত্রে তা ৫০,০০০ টাকার ওপরে চলে যেতে পারে।

অন্যদিকে সাধারণ কাঠের চেয়ারগুলো মূলত বসার জন্য ব্যবহার হয় যেখানে আরামের পাশাপাশি স্থায়িত্বের বিষয়টি বেশি গুরুত্ব পায়। এই ধরনের চেয়ারের দাম ২,০০০ থেকে ৮,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। যারা কম খরচে ব্যবহারিক ফার্নিচার খুঁজছেন তাদের জন্য সাধারণ কাঠের চেয়ার আদর্শ। তবে যারা আরাম এবং নান্দনিকতার সমন্বয় চান তাদের জন্য কাঠের সোফা চেয়ার সেরা পছন্দ।

খাটানো ও মোড়ানো কাঠের চেয়ারের দাম

খাটানো এবং মোড়ানো কাঠের চেয়ার বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। খাটানো কাঠের চেয়ার সাধারণত শক্ত এবং স্থায়িত্বপূর্ণ হয় কারণ এতে একক টুকরো কাঠ ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের চেয়ারের দাম সাধারণত ৪,০০০ থেকে ১২,০০০ টাকার মধ্যে থাকে।

অন্যদিকে, মোড়ানো কাঠের চেয়ার (Plywood বা Veneer) অপেক্ষাকৃত সস্তা এবং হালকা হয়। এ ধরনের চেয়ারের দাম ১,৫০০ থেকে ৬,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। তবে দীর্ঘস্থায়ীতার দিক থেকে খাটানো কাঠের চেয়ার বেশি উপযোগী। বিশেষ করে যারা ঘরের সাজসজ্জা ও স্থায়িত্ব একসঙ্গে চান তারা খাটানো কাঠের চেয়ার বেছে নিতে পারেন।

বাংলাদেশে জনপ্রিয় কাঠের চেয়ার ব্র্যান্ড ও তাদের দাম

বাংলাদেশের আসবাব বাজারে বেশ কিছু নামকরা ব্র্যান্ড রয়েছে যারা মানসম্পন্ন কাঠের চেয়ার সরবরাহ করে থাকে। যেমন হাতিল, পারটেক্স, আড়ং এবং ইশো। এসব ব্র্যান্ডের কাঠের চেয়ারের দাম তুলনামূলক বেশি হলেও গুণগত মানের দিক থেকে এগুলো বেশ ভালো।

হাতিলের সাধারণ কাঠের চেয়ার ৬,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। আর ডাইনিং সেটের জন্য এই দাম ৩০,০০০ থেকে ৭০,০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে। পারটেক্স এবং আড়ংয়ের চেয়ারের দাম তুলনামূলক কম ৫,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকার মধ্যে। ইশো সাধারণত আধুনিক ডিজাইনের কাঠের চেয়ার তৈরি করে যেগুলোর দাম ৮,০০০ থেকে ২৫,০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।

স্থানীয় প্রস্তুতকারকরা তুলনামূলক কম দামে কাঠের চেয়ার সরবরাহ করে তবে এখানে মানের ব্যাপারে কিছুটা সতর্ক থাকতে হয়।

আর পড়ুন: কাঠের পড়ার টেবিলের দাম 

উপসংহার

কাঠের চেয়ারের দাম নির্ভর করে অনেক বিষয়ের ওপর—কাঠের ধরন, ডিজাইন, ব্র্যান্ড এবং বাজার চাহিদা। একজন ক্রেতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজের প্রয়োজন এবং বাজেটের সাথে সামঞ্জস্য রেখে চেয়ার বেছে নেওয়া। যদি টেকসই এবং মানসম্মত কাঠের চেয়ার চান তবে কিছুটা বেশি খরচ করে ব্র্যান্ডেড চেয়ার কেনাই ভালো। অন্যদিকে যারা সাশ্রয়ী মূল্যে কাঠের চেয়ার খুঁজছেন তাদের জন্য স্থানীয় বাজার বা পুরাতন চেয়ারের দিকে নজর দেওয়া যেতে পারে।

চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই বাজার যাচাই-বাছাই করে নেয়া উচিত। বিশেষ করে অনলাইন এবং অফলাইন দোকান থেকে দাম ও মানের তুলনা করে কেনাকাটা করা বুদ্ধিমানের কাজ। আশা করি এই নিবন্ধটি কাঠের চেয়ার কেনার সময় আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *