বাংলাদেশে কাঠের বোর্ড ঘরোয়া এবং বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের ক্ষেত্রে অপরিহার্য। কাঠের বোর্ড ফার্নিচার তৈরিতে, বিল্ডিং নির্মাণে এবং অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জায় ব্যবহৃত হয়। তবে কাঠের বোর্ড কেনার আগে এর ধরন, গুণগত মান এবং বাজার মূল্য সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরি। বিভিন্ন প্রকার কাঠের বোর্ডের দাম এবং বৈশিষ্ট্য ভিন্ন হওয়ায় সঠিক বোর্ড নির্বাচন করা অনেক সময় চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়ায়। এই নিবন্ধে কাঠের বোর্ডের প্রকারভেদ তাদের ব্যবহারিক গুণাবলী এবং বাংলাদেশে বর্তমান বাজারদর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
কাঠের বোর্ডের প্রকারভেদ- বাংলাদেশে কাঠের বোর্ডের দাম
বাংলাদেশের বাজারে কাঠের বোর্ডের কয়েকটি প্রধান ধরন পাওয়া যায় যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সাধারণ কাঠের বোর্ড, গর্জন কাঠ, সেগুন কাঠ, সিন্দুর কাঠ এবং মেলামাইন কাঠ। প্রতিটি প্রকারের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা তাদের নির্দিষ্ট কাজে ব্যবহারযোগ্য করে তোলে।
আর পড়ুন: আরএফএল কাঠের দরজার দাম ২০২৪
সাধারণ কাঠের বোর্ড সাশ্রয়ী মূল্যের এবং দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত হয়। গর্জন কাঠের বোর্ড মাঝারি মানের যা ফার্নিচার এবং দরজা তৈরিতে জনপ্রিয়। সেগুন কাঠ তার উচ্চমানের জন্য পরিচিত এবং মূলত প্রিমিয়াম ফার্নিচার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে মেলামাইন কাঠের বোর্ড আধুনিক নকশা এবং অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জার ক্ষেত্রে বেশ জনপ্রিয়। প্রতিটি কাঠের বোর্ডের গুণগত মান এবং দাম তাদের ব্যবহারের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে।
সাধারণ কাঠের বোর্ড-সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ী অপশন
সাধারণ কাঠের বোর্ড বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় বিশেষত গ্রামাঞ্চলে। এটি তুলনামূলকভাবে সস্তা এবং সহজলভ্য। এ ধরনের কাঠ সাধারণত পাইন গাব বা নিম্নমানের কাঠ দিয়ে তৈরি হয়। দৈনন্দিন কাজে যেমন অস্থায়ী কাঠামো নির্মাণ বা কম গুরুত্বপূর্ণ আসবাবপত্র তৈরিতে এই বোর্ড ব্যবহার করা হয়।
সাধারণ কাঠের বোর্ড দেখতে সাধারণ মানের হলেও এটি হালকা এবং সহজেই প্রক্রিয়াজাত করা যায়। এর একটি বড় সুবিধা হলো এটি বাজারে সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ী। ফলে সীমিত বাজেটের ব্যবহারকারীদের জন্য এটি একটি আদর্শ পছন্দ।
দাম: সাধারণ কাঠের বোর্ডের দাম প্রতি বর্গফুট ৩০-৫০ টাকা। তবে আকার ও গুণমানের ওপর ভিত্তি করে দাম কিছুটা কম বা বেশি হতে পারে।
ব্যবহার:
- সাময়িক কাঠামো।
- দরজা বা জানালার ফ্রেম।
- কম দামের আসবাবপত্র।
গর্জন কাঠের বোর্ড – স্থায়িত্ব এবং জনপ্রিয়তা – বাংলাদেশে কাঠের বোর্ডের দাম
গর্জন কাঠের বোর্ড তার স্থায়িত্ব এবং বহুমুখী ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশের বাজারে অন্যতম জনপ্রিয়। গর্জন কাঠ মাঝারি মানের কাঠের মধ্যে পড়ে এবং এটি দেখতে মসৃণ হওয়ার পাশাপাশি বেশ টেকসই। ফার্নিচার, দরজা এবং জানালায় এই কাঠের ব্যবহার ব্যাপক।
গর্জন কাঠের একটি বড় সুবিধা হলো এটি মাঝারি দামের মধ্যেই পাওয়া যায় এবং এটি সহজেই প্রক্রিয়াজাত করা সম্ভব। বিশেষ করে বাড়ির আসবাবপত্র তৈরিতে এই কাঠ ব্যবহার করা হয় যা দেখতে আকর্ষণীয় এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়। -বাংলাদেশে কাঠের বোর্ডের দাম
দাম: গর্জন কাঠের বোর্ডের দাম প্রতি বর্গফুট ১০০-১৫০ টাকা। এটি মান এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের উপর নির্ভর করে।
ব্যবহার:
- বাড়ির ফার্নিচার।
- দরজা এবং জানালা।
- অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জার কাঠামো।
সেগুন কাঠের বোর্ড- উচ্চমান এবং দামের বিবরণ – বাংলাদেশে কাঠের বোর্ডের দাম
সেগুন কাঠের বোর্ড বাংলাদেশের বাজারে প্রিমিয়াম কাঠের মধ্যে অন্যতম। এই কাঠের বোর্ড তার শক্তি, স্থায়িত্ব এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। সেগুন কাঠে প্রাকৃতিক তেলের উপস্থিতি থাকে যা এটিকে দীর্ঘস্থায়ী এবং জলরোধী করে তোলে।
সেগুন কাঠ সাধারণত বিলাসবহুল ফার্নিচার মেঝে এবং অভ্যন্তরীণ কাঠামো তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এটি দেখতে দৃষ্টিনন্দন এবং উচ্চ দামে বিক্রি হয়। যদিও দাম বেশি তবে এটি দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিকভাবে সাশ্রয়ী কারণ এর রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন কম।
দাম: সেগুন কাঠের বোর্ডের দাম প্রতি বর্গফুট ২৫০-৪০০ টাকা। বাংলাদেশে এটি বেশ ব্যয়বহুল বিশেষত উচ্চমানের সেগুন কাঠের ক্ষেত্রে।
ব্যবহার:
- বিলাসবহুল আসবাবপত্র।
- মেঝে এবং সিল
- অভ্যন্তরীণ নকশার কাঠামো।
সিন্দুর কাঠের বোর্ড – ফার্নিচারের জন্য প্রিমিয়াম অপশন
সিন্দুর কাঠ মূলত ফার্নিচার তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয় এবং এটি প্রিমিয়াম মানের একটি কাঠ। এই কাঠের বোর্ড অত্যন্ত শক্তিশালী এবং স্থায়িত্বে উচ্চমানের। সিন্দুর কাঠ সাধারণত ঘরের ডাইনিং টেবিল, সেলফ এবং অন্যান্য ভারি আসবাবপত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
এই কাঠের বোর্ডে প্রাকৃতিক রঙ এবং মসৃণ ফিনিশিং থাকে যা এটিকে অত্যন্ত আকর্ষণীয় করে তোলে। দাম তুলনামূলকভাবে বেশি হওয়ার কারণে এটি প্রধানত উচ্চ আয়ের গ্রাহকদের মধ্যে জনপ্রিয়।
দাম: সিন্দুর কাঠের বোর্ডের দাম প্রতি বর্গফুট ২০০-৩০০ টাকা। উচ্চমানের বোর্ডের ক্ষেত্রে এই দাম আরও বাড়তে পারে।
ব্যবহার:
- ডাইনিং টেবিল এবং সেলফ।
- বাণিজ্যিক ফার্নিচার।
- ডেকোরেটিভ কাঠামো।
আর পড়ুন: লোহা কাঠের চৌকাঠের দাম
মেলামাইন কাঠের বোর্ড – নকশার জন্য আধুনিক পছন্দ
মেলামাইন কাঠের বোর্ড আধুনিক ঘরের জন্য একটি আদর্শ পছন্দ। এটি মূলত কাঠের বোর্ডের উপর মেলামাইন লেমিনেশন যুক্ত করে তৈরি করা হয় যা এটি দেখতে অত্যন্ত সুন্দর এবং মসৃণ করে। মেলামাইন বোর্ড বিভিন্ন রঙ, ডিজাইন এবং টেক্সচারে পাওয়া যায় যা অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জায় বৈচিত্র্য আনে।
এই বোর্ডের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এটি সহজে পরিষ্কার করা যায় এবং দাগ প্রতিরোধী। এটি প্রধানত কিচেন ক্যাবিনেট, ওয়ার্ডরোব এবং অফিসের আসবাবপত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
দাম: মেলামাইন কাঠের বোর্ডের দাম প্রতি বর্গফুট ১৫০-২৫০ টাকা। ডিজাইন এবং মান অনুযায়ী দাম কমবেশি হতে পারে।
ব্যবহার:
- কিচেন ক্যাবিনেট।
- অফিস ডেস্ক।
- অভ্যন্তরীণ ফিনিশিং।
প্লাইউড বোর্ড – বহুমুখী ব্যবহার এবং টেকসই অপশন
প্লাইউড বোর্ড কাঠের পাতলা স্তর একত্র করে তৈরি করা হয় এবং এটি খুবই টেকসই ও মজবুত। বাংলাদেশের বাজারে প্লাইউড বোর্ড অত্যন্ত জনপ্রিয় বিশেষত ঘরের দরজা, জানালা এবং আসবাবপত্র তৈরিতে। প্লাইউডের প্রক্রিয়াকরণে আঠা এবং চাপের মাধ্যমে কাঠের পাতগুলো একত্রিত করা হয় যা এটিকে আরো শক্তিশালী করে তোলে।
- বৈশিষ্ট্য: প্লাইউডের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর মজবুত গঠন এবং লম্বা স্থায়িত্ব। এটি সহজে বাঁকানো বা ক্ষতিগ্রস্ত হয় না এবং দীর্ঘদিন ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত।
- দাম: বাংলাদেশে প্লাইউড বোর্ডের দাম মান ও আকারভেদে প্রতি বর্গফুট ৮০-১৫০ টাকার মধ্যে। উচ্চমানের ফায়ারপ্রুফ বা ওয়াটারপ্রুফ প্লাইউডের দাম আরও বেশি হতে পারে।
ব্যবহার:
- দরজা ও জানালা।
- ফার্নিচার।
- অন্দরমহল সাজানোর কাঠামো।
হার্ডবোর্ড – সাশ্রয়ী এবং সাধারণ প্রয়োজনে ব্যবহৃত
হার্ডবোর্ড যা পাটকাঠির ধুলা এবং কাঠের ছোট কণার মিশ্রণে তৈরি একটি সাশ্রয়ী বিকল্প। এটি সাধারণত বাড়ির সামান্য কাঠামোগত কাজে ব্যবহৃত হয়। হার্ডবোর্ড হালকা এবং সহজে স্থাপনযোগ্য হওয়ায় এটি ছোট বাজেটের প্রকল্পের জন্য আদর্শ।
- বৈশিষ্ট্য: হার্ডবোর্ড সাধারণত কম চাপ সহ্য করতে পারে এবং এটি নরম প্রকৃতির। তবে এটি রঙ এবং লেমিনেট করে আকর্ষণীয় করে তোলা যায়।
- দাম: হার্ডবোর্ডের দাম প্রতি বর্গফুট ৩০-৬০ টাকা। এটি প্লাইউড বা অন্যান্য কাঠের বোর্ডের তুলনায় বেশ সাশ্রয়ী।
ব্যবহার:
- প্যাকেজিং
- অস্থায়ী পার্টিশন।
- হালকা আসবাবপত্র।
এমডিএফ বোর্ড – আধুনিক ডিজাইন এবং বহুমুখী ব্যবহার
মিডিয়াম ডেনসিটি ফাইবারবোর্ড (এমডিএফ) বর্তমানে আধুনিক আসবাবপত্র তৈরিতে অন্যতম জনপ্রিয়। এটি কাঠের ধূলিকণাকে রেজিন এবং মোম দিয়ে একত্রিত করে তৈরি করা হয়। এমডিএফ বোর্ড দেখতে মসৃণ এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য সহজ।
- বৈশিষ্ট্য: এমডিএফ বোর্ডের পৃষ্ঠতল অত্যন্ত মসৃণ হওয়ায় এটি পেইন্ট বা লেমিনেশনের জন্য আদর্শ। এটি কাঠের তুলনায় হালকা এবং ব্যয়বহুল প্রকল্পে সাশ্রয়ী।
- দাম: এমডিএফ বোর্ডের দাম প্রতি বর্গফুট ১০০-২০০ টাকা। উচ্চ মানের বা লেমিনেটেড এমডিএফের ক্ষেত্রে এই দাম কিছুটা বেশি হতে পারে।
ব্যবহার:
- ফার্নিচার।
- মডুলার কিচেন।
- অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা।
পার্টিকেল বোর্ড – অর্থনৈতিক ও সহজলভ্য সমাধান
পার্টিকেল বোর্ড কাঠের কণার সঙ্গে আঠা মিশিয়ে তৈরি করা হয়। এটি তুলনামূলকভাবে সস্তা এবং সহজলভ্য। তবে এটি ভারী কাজের জন্য নয় হালকা আসবাবপত্র তৈরিতে এটি ব্যবহৃত হয়।
- বৈশিষ্ট্য: পার্টিকেল বোর্ড দেখতে আকর্ষণীয় হলেও এটি তুলনামূলকভাবে কম টেকসই। এটি জল বা আর্দ্রতার সংস্পর্শে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
- দাম: পার্টিকেল বোর্ডের দাম প্রতি বর্গফুট ৬০-১২০ টাকা।
ব্যবহার:
- বইয়ের তাক।
- অস্থায়ী ফার্নিচার।
- ছোট বাজেটের প্রজেক্ট।
ব্লকবোর্ড – ভারি কাঠামোর জন্য টেকসই সমাধান
ব্লকবোর্ড মূলত সলিড কাঠের ফালি এবং প্লাইউডের মিশ্রণ। এটি উচ্চ চাপ এবং ভারী ওজন সহ্য করতে সক্ষম হওয়ায় বড় আকারের দরজা, জানালা এবং আলমারি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
- বৈশিষ্ট্য: ব্লকবোর্ড দেখতে অত্যন্ত শক্তিশালী এবং এটি দীর্ঘস্থায়ী। এটি সহজে বাঁকা হয় না এবং ভারী ব্যবহারের জন্য আদর্শ।
- দাম: ব্লকবোর্ডের দাম প্রতি বর্গফুট ১৫০-৩০০ টাকা।
ব্যবহার:
- দরজা।
- বড় আলমারি।
- অন্দর কাঠামো।
বাংলাদেশে কাঠের বোর্ড কেনার সময় গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনাগুলো
কাঠের বোর্ড কেনার সময় কিছু বিষয় বিবেচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো হলো:
- গুণমান যাচাই: কাঠের বোর্ডের গুণমান ভালো কিনা তা যাচাই করুন।
- ব্যবহার উপযোগিতা: কাঠের বোর্ড কোথায় ব্যবহার হবে সেটি বিবেচনা করে সঠিক বোর্ড নির্বাচন করুন।
- জল এবং আর্দ্রতা প্রতিরোধ: আর্দ্রতা প্রতিরোধক বোর্ড দীর্ঘস্থায়ী হয়।
- দাম: বাজেটের সাথে মানানসই বোর্ড কিনুন।
- সঠিক সরবরাহকারী নির্বাচন: বিশ্বস্ত এবং অভিজ্ঞ সরবরাহকারীর কাছ থেকে কাঠের বোর্ড কিনুন।
আর পড়ুন: কাঠের চিরুনি দাম
উপসংহার – বাংলাদেশে কাঠের বোর্ডের দাম
বাংলাদেশে কাঠের বোর্ডের বাজার বৈচিত্র্যময় এবং প্রতিটি প্রকার বোর্ডের নিজস্ব সুবিধা ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সাধারণ কাঠের বোর্ড থেকে শুরু করে প্রিমিয়াম সেগুন কাঠ পর্যন্ত প্রতিটি বোর্ডের ব্যবহার নির্ভর করে তাদের গুণগত মান এবং প্রয়োজনীয়তার উপর। বোর্ড কেনার সময় গুণমান, ব্যবহারযোগ্যতা এবং বাজেট বিবেচনা করা জরুরি।
এই আর্টিকেলে কাঠের বোর্ডের প্রকারভেদ, দাম এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি বিস্তৃত ধারণা দেওয়া হয়েছে। এটি আশা করা যায় এই তথ্যগুলো আপনার কাঠের বোর্ড কেনার সিদ্ধান্তকে সহজ করবে।
আপনার অভিজ্ঞতা বা মন্তব্য শেয়ার করুন এবং অন্যদের সহায়তার জন্য এই আর্টিকেলটি শেয়ার করুন। এছাড়াও কাঠের বোর্ড সম্পর্কিত আরও তথ্য পেতে আমাদের অন্যান্য আর্টিকেল পড়ুন।