কোন গাছের কাঠ ভালো? বাংলাদেশে কাঠ চেনার উপায়

কোন গাছের কাঠ ভালো

কাঠের ব্যবহার হাজার বছর ধরে মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ঘরের আসবাবপত্র, ভবন নির্মাণ, নৌকা তৈরি, এমনকি শিল্পকলাতেও কাঠের অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাদেশে কাঠের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে যার ফলে ভালো মানের কাঠ চেনা এবং তার গুণমান সম্পর্কে জানা একান্ত প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি ভালো কাঠ কীভাবে চেনা যায়, কোন কাঠ টেকসই এবং কোন কাঠের দাম কী রকম – এইসব প্রশ্নের উত্তর জানা থাকলে কাঠ কেনা এবং ব্যবহার করা সহজ হয়। এই নিবন্ধে আমরা ভালো কাঠের গুণাবলী, প্রকারভেদ এবং তাদের বাজারমূল্য সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করবো যা আপনাকে সঠিক কাঠ নির্বাচন করতে সহায়তা করবে। – কোন গাছের কাঠ ভালো

আর পড়ুন: কালোজিরা গাছ চা পদ্ধতি 

বাংলাদেশে কাঠের ব্যবহার ও গুণমানের প্রয়োজনীয়তা

বাংলাদেশে কাঠের প্রয়োজনীয়তা বিশাল কারণ ঘরের আসবাবপত্র থেকে শুরু করে বাড়ি নির্মাণে কাঠের ব্যবহার সর্বত্রই লক্ষ্যণীয়। কাঠের মান কেবল তার টেকসইত্বকেই নির্ধারণ করে না। এটি ঘরের শোভা এবং আসবাবপত্রের আয়ুষ্কালকেও প্রভাবিত করে। বিশেষ করে বাংলাদেশের জলবায়ু কাঠের টেকসই গুণাবলীকে সরাসরি প্রভাবিত করে। যে কারণে উচ্চ মানসম্পন্ন এবং ঘুন প্রতিরোধী কাঠের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কাঠের মান ও স্থায়িত্ব নির্ভর করে কাঠের প্রকারভেদ এবং গুণাগুণের ওপর। ভালো মানের কাঠ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে টিকে থাকতে পারে যেমন আর্দ্রতা ও ঘুনের সমস্যা। বাংলাদেশে সঠিক কাঠ বাছাইয়ের মাধ্যমে টেকসই ও সাশ্রয়ী আসবাবপত্র তৈরি করা সম্ভব। কাঠের এই ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করলে কেন টেকসই এবং মানসম্পন্ন কাঠ বাছাই জরুরি তা বোঝা যায়।

ভালো কাঠ চেনার উপায় – কাঠের গুণাগুণের বৈশিষ্ট্য

ভালো কাঠ চেনার কয়েকটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সাধারণত কাঠের গুণাবলী সম্পর্কে ধারণা পেতে কাঠের ঘনত্ব, নমনীয়তা, ঘুন প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং টেকসইত্ব দেখা হয়। কাঠের গুণাবলীর কিছু বৈশিষ্ট্য নিচে আলোচনা করা হলো:

  • ঘনত্ব: ঘনত্ব বেশি হলে কাঠের ওজন বেশি হয় এবং তা সাধারণত শক্তিশালী হয়। শেগুন কাঠের মতো ঘন কাঠ অত্যন্ত টেকসই এবং মূল্যবান।
  • শক্তি: কাঠের প্রকারভেদ অনুযায়ী তার শক্তিমত্তা পরিবর্তিত হয়। শাল ও সেগুন কাঠ ঘরের নির্মাণ কাজে শক্তি ও স্থায়িত্বের জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • নমনীয়তা: আসবাবপত্রের কাঠকে নমনীয় হতে হয় যেমন গামারি কাঠ যা হালকা ও সহজে আকার দেওয়া যায়।
  • ঘুন প্রতিরোধ: ভালো মানের কাঠ ঘুন প্রতিরোধ ক্ষমতা রাখে। শেগুন ও শাল কাঠ ঘুন প্রতিরোধে বেশ কার্যকর।

কাঠ চেনার ক্ষেত্রে সাধারণত বাজারে ভালো মানের কাঠের দাম তুলনামূলক বেশি হয় যেমন শেগুন কাঠের দাম ৩০০০-৫০০০ টাকা প্রতি ঘনফুটের মতো হতে পারে। এই বৈশিষ্ট্যগুলির মাধ্যমে কাঠের গুণমান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় এবং সঠিক কাঠ নির্বাচন সহজ হয়।

কোন গাছের কাঠ ভালো এবং কেন – কোন গাছের কাঠ ভালো

বাংলাদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং উচ্চ মানসম্পন্ন কিছু কাঠ হলো শেগুন, শাল, মহগনি এবং গামারি কাঠ। তাদের বৈশিষ্ট্য, গুণমান এবং দাম অনুযায়ী এই কাঠগুলো বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়। নিচে বিভিন্ন কাঠের বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হলো:

  • শেগুন কাঠ (Teak): এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে দামী এবং জনপ্রিয় কাঠ। শেগুন কাঠ টেকসই, জলরোধী এবং ঘুন প্রতিরোধী। বাড়ি নির্মাণ ও আসবাবপত্র তৈরিতে শেগুন কাঠ ব্যবহার করা হয়। এর দাম প্রতি ঘনফুট প্রায় ৩০০০-৫০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
  • গামারি কাঠ: গামারি কাঠ হালকা ও মজবুত এবং সহজে আকার দেওয়া যায় যা আসবাবপত্র তৈরিতে উপযুক্ত। এটি বাজারে তুলনামূলক সস্তা প্রতি ঘনফুটের দাম প্রায় ৭০০-১২০০ টাকার মধ্যে।
  • মহগনি কাঠ: আসবাবপত্র এবং কাঠের দরজা-জানালার কাজে এটি বহুল ব্যবহৃত। মহগনি কাঠের গুণাবলী, শক্তি এবং টেকসই ক্ষমতা এই কাঠকে জনপ্রিয় করেছে। মহগনি কাঠের দাম প্রতি ঘনফুট প্রায় ১৫০০-২৫০০ টাকা।
  • শাল কাঠ: এটি একটি কঠিন কাঠ এবং অত্যন্ত শক্তিশালী যা ঘরের কাঠামো তৈরি এবং দরজা-জানালা তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। শাল কাঠের দাম প্রতি ঘনফুট ২৫০০-৪০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

এগুলো ছাড়াও কাঁঠাল এবং জাম কাঠ আসবাবপত্রে ব্যবহৃত হয়। তবে এই কাঠগুলোর তুলনায় শেগুন এবং শাল কাঠ বেশি শক্তিশালী এবং টেকসই।

আর পড়ুন: বাংলাদেশে কাঠের বোর্ডের দাম 

ভালো কাঠের গুণাগুণে প্রভাবিত করণীয় বিষয়সমূহ

কাঠের গুণমানের উপর কিছু বিষয় প্রভাব ফেলে যেমন কাঠের আর্দ্রতা, কাঠ প্রক্রিয়াকরণ এবং তার প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য। এই বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখলে কাঠের টেকসইত্ব ও স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায়। কিছু প্রধান প্রভাবিতকারী বিষয়:

  • আর্দ্রতা: কাঠ যদি বেশি আর্দ্র হয় তবে এতে ঘুন ধরার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য শুকনো এবং প্রক্রিয়াকৃত কাঠ ব্যবহার করাই উত্তম।
  • প্রক্রিয়াকরণ: কাঠ কাটা, মসৃণকরণ এবং শুকানোর পর এর মান ভালো হয়। শেগুন এবং মহগনি কাঠ এই প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে আরও স্থায়িত্বশীল হয়।
  • সঠিক কাঠের অবস্থান ও যত্ন: ঘরের তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার সাথে মানানসই কাঠ ব্যবহার করা উচিত। আর্দ্রতার থেকে কাঠকে বাঁচাতে কিছু বিশেষ প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয়।

এছাড়া বিভিন্ন পরিবেশে কাঠের সংরক্ষণে নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করলে কাঠের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায়।

বিভিন্ন কাঠের ঘুন প্রতিরোধী গুণাবলী

ঘুন কাঠের বড় শত্রু কারণ এটি কাঠের স্থায়িত্ব কমিয়ে দেয়। ভালো কাঠ সাধারণত ঘুন প্রতিরোধী হয়। নিম্নে কিছু ঘুন প্রতিরোধী কাঠের উদাহরণ ও তাদের গুণাগুণ দেওয়া হলো:

  • শেগুন কাঠ: ঘুন প্রতিরোধী ক্ষমতা এবং তেলের উপস্থিতির জন্য এই কাঠে ঘুন খুব কম হয়। শেগুন কাঠের দাম বেশি হওয়ায় এটি প্রিমিয়াম কাঠ হিসেবে বিবেচিত।
  • শাল কাঠ: অত্যন্ত শক্ত কাঠ এবং ঘুন প্রতিরোধী গুণাবলীর জন্য এই কাঠ জনপ্রিয়। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়।
  • মহগনি কাঠ: তুলনামূলকভাবে ঘুনের প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি এবং আসবাবপত্রে ব্যবহারের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।

কাঠের ঘুন প্রতিরোধ ক্ষমতা সাধারণত কাঠের অভ্যন্তরীণ তেল এবং রেজিনের উপর নির্ভর করে। বিশেষত, শাল, শেগুন এবং মহগনি কাঠের ঘুন প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী। ভালো মানের কাঠের মাধ্যমে আপনি দীর্ঘস্থায়ী এবং মানসম্পন্ন আসবাবপত্র নিশ্চিত করতে পারবেন।

কোন গাছের কাঠ ভালো

বাংলাদেশে কাঠের মূল্য এবং কেনার সময় করণীয় বিষয়সমূহ

বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের কাঠের দাম কাঠের গুণগত মান, টেকসইত্ব এবং শক্তির উপর নির্ভর করে। কাঠ কেনার সময় কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় রাখা উচিত যাতে সঠিক কাঠ কেনা হয় এবং দীর্ঘস্থায়ী উপকার পাওয়া যায়। কাঠ কেনার সময় যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে সেগুলো নিচে দেওয়া হলো:

  • কাঠের প্রকার: সাধারণত শেগুন, শাল, মহগনি এবং গামারি কাঠের দাম বেশি এবং এসব কাঠের টেকসই ক্ষমতা ও ঘুন প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি।
  • কাঠের ঘনত্ব: কাঠের ঘনত্ব বেশি হলে সেটি বেশি টেকসই এবং শক্তিশালী হয়। শাল এবং শেগুন কাঠ এদিক থেকে বেশ নির্ভরযোগ্য।
  • কাঠের আর্দ্রতা: কাঠ যদি ভালোভাবে শুকানো না হয় তবে সেটিতে আর্দ্রতা বেশি থাকবে এবং তা দ্রুত ঘুনে আক্রান্ত হতে পারে।
  • ব্যবহারের উদ্দেশ্য: বাড়ি নির্মাণে কাঠ ব্যবহার করা হলে তা শক্তিশালী হওয়া উচিত যেমন শাল কাঠ। আর আসবাবপত্রের ক্ষেত্রে মহগনি ও গামারি কাঠ ভাল।

বাংলাদেশে কাঠের দাম সাধারণত প্রতি ঘনফুট হিসেবে নির্ধারিত হয় যা নিচে দেওয়া হলো:

  • শেগুন কাঠ: প্রতি ঘনফুটের দাম প্রায় ৩০০০-৫০০০ টাকা
  • শাল কাঠ: প্রতি ঘনফুট ২৫০০-৪০০০ টাকা
  • মহগনি কাঠ: প্রতি ঘনফুট ১৫০০-২৫০০ টাকা
  • গামারি কাঠ: প্রতি ঘনফুট ৭০০-১২০০ টাকা

সঠিক কাঠ বাছাই করার জন্য অভিজ্ঞ কারিগর বা কাঠ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত কারণ তারা কাঠের গুণগত মান বিচার করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারেন।

আর পড়ুন: অশ্বগন্ধা গাছ 

ভালো কাঠ নির্বাচন করার উপায় -কোন গাছের কাঠ ভালো

ভালো কাঠ নির্বাচন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। অনেক সময় কাঠের বাহ্যিক চেহারা দেখে ভালো-মন্দ বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই কাঠের গুণগত মান এবং বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা প্রয়োজন। ভালো কাঠ বাছাই করার কিছু কার্যকর উপায় হলো:

  • কাঠের আর্দ্রতা মাপা: কাঠের আর্দ্রতা বেশি থাকলে সেটি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না। কাঠ শুকানোর প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানা থাকলে কাঠ কতদিন টেকসই হবে তা অনুমান করা যায়।
  • রঙ এবং গঠন: সঠিক কাঠের রং সাধারণত গাঢ় হয় এবং কাঠের ঘনত্ব বেশি হয়। যেমন শেগুন এবং শাল কাঠের রং গাঢ় ও মসৃণ হয় যা এদের স্থায়িত্বশীল করে।
  • প্রক্রিয়াকরণ: কাঠের প্রক্রিয়াকরণের জন্য বিশেষত মোটা কাঠকেই ব্যবহার করা উচিত। এটি কাঠের গঠন মজবুত রাখে এবং দীর্ঘস্থায়ী করে।
  • বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া: কাঠ কেনার আগে অভিজ্ঞ কারিগর বা কাঠ ব্যবসায়ীর পরামর্শ নিলে কাঠের মান এবং স্থায়িত্ব সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হয়।

এছাড়া স্থানীয় কাঠ এবং আমদানিকৃত কাঠের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। আমদানিকৃত কাঠ তুলনামূলকভাবে বেশি দামি এবং ভালো মানের হয়। তবে সঠিক তথ্য জানা থাকলে স্থানীয় কাঠ থেকেও ভালো মানের কাঠ বাছাই করা সম্ভব।

বিভিন্ন কাঠের টেকসই ও পরিবেশবান্ধব গুণাবলী

বর্তমান যুগে টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব কাঠের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। কারণ পরিবেশ রক্ষায় টেকসই কাঠ ব্যবহার একটি কার্যকর উপায়। নিচে কিছু পরিবেশবান্ধব কাঠের বৈশিষ্ট্য ও টেকসই গুণাবলী তুলে ধরা হলো:

  • শেগুন কাঠ: শেগুন কাঠের টেকসই ক্ষমতা বেশ ভালো। এটি প্রাকৃতিকভাবে টেকসই এবং ঘুন প্রতিরোধী। এর ফলে এর আয়ুষ্কাল অনেক বেশি হয় যা পরিবেশের জন্য উপকারী।
  • বাঁশ কাঠ: বাঁশ কাঠের ব্যবহারে কাঠের চাহিদা কিছুটা হলেও কমিয়ে আনা সম্ভব হয় কারণ বাঁশ দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং পুনরায় ব্যবহারযোগ্য।
  • সেগুন কাঠ: এটি দীর্ঘস্থায়ী এবং বিভিন্ন আবহাওয়ার সাথে মানিয়ে নিতে পারে। টেকসই আসবাবপত্র তৈরির জন্য সেগুন কাঠের জনপ্রিয়তা রয়েছে।

টেকসই কাঠ ব্যবহার আমাদের বনভূমি সংরক্ষণ করতে সাহায্য করে। বর্তমানে বিভিন্ন কাঠ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানও টেকসই কাঠ প্রস্তুতে উৎসাহিত হচ্ছে।

কাঠ সংরক্ষণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ পদ্ধতি – কোন গাছের কাঠ ভালো

কাঠের দীর্ঘস্থায়ীতা নিশ্চিত করতে সঠিক সংরক্ষণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ। কাঠ যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা না হয় তবে তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কাঠ সংরক্ষণের জন্য কিছু কার্যকর পদ্ধতি নিচে দেওয়া হলো:

  • আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ: কাঠ আর্দ্র পরিবেশে দ্রুত নষ্ট হয় তাই কাঠকে শুকনো স্থানে সংরক্ষণ করা উচিত। এয়ার কন্ডিশন বা শুকনো পরিবেশে রাখলে কাঠের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায়।
  • তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ: অত্যধিক তাপ বা আর্দ্রতা কাঠের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আসবাবপত্রের কাঠকে সোজাসুজি সূর্যালোকে রাখা উচিত নয়।
  • কীটনাশক ব্যবহার: ঘুন বা পোকামাকড় থেকে রক্ষা করতে কাঠে বিশেষ কীটনাশক প্রয়োগ করা যেতে পারে। এটি কাঠের ঘুন প্রতিরোধে সহায়ক।
  • প্রসেসিং বা প্রলেপ: কাঠের স্থায়িত্ব বাড়ানোর জন্য কিছু কাঠকে প্রলেপ দেওয়া হয় যা কাঠকে আবহাওয়া এবং কীটপতঙ্গের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।

নিয়মিত কাঠ সংরক্ষণ এবং রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে কাঠের স্থায়িত্ব বাড়ানো সম্ভব এবং কাঠের গুণগত মান বজায় রাখা যায়।

কাঠ ব্যবহারে কিছু সাধারণ ভুল এবং তা প্রতিরোধ করার উপায়

কাঠ ব্যবহারে সাধারণ কিছু ভুলের কারণে কাঠের আয়ুষ্কাল কমে যায় এবং কাঠ দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিছু সাধারণ ভুল এবং সেগুলো প্রতিরোধের উপায় নিচে দেওয়া হলো:

  • আর্দ্র পরিবেশে কাঠ ব্যবহার করা: কাঠ যদি আর্দ্র পরিবেশে রাখা হয় তবে তা দ্রুত ঘুনে আক্রান্ত হতে পারে। এক্ষেত্রে প্রতিরোধের উপায় হলো আর্দ্রতা প্রতিরোধী কাঠ যেমন শেগুন বা শাল কাঠ ব্যবহার করা।
  • প্রসেসিং না করা কাঠ ব্যবহার: কাঠ প্রক্রিয়াকরণ না করে সরাসরি ব্যবহার করলে তা দ্রুত নষ্ট হতে পারে। কাঠের উপর প্রলেপ দিয়ে আর্দ্রতা এবং কীটপতঙ্গ থেকে রক্ষা করা যায়।
  • ঠিকমতো সংরক্ষণ না করা: কাঠ যথাযথভাবে সংরক্ষণ না করলে তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। কাঠ সংরক্ষণের জন্য শুকনো এবং ঠাণ্ডা পরিবেশের প্রয়োজন।

কাঠ ব্যবহারের সময় এই বিষয়গুলো খেয়াল করলে কাঠের টেকসই ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং দীর্ঘ সময় ধরে তা ব্যবহারযোগ্য থাকে।

আর পড়ুন: ক্যাকটাস গাছের দাম

উপসংহার – কোন গাছের কাঠ ভালো

বাংলাদেশে কাঠের চাহিদা এবং কাঠের মানসম্পন্ন বাছাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাঠের গুণগত মান যাচাই, সঠিক কাঠ নির্বাচন এবং কাঠ সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ আমাদের আসবাবপত্র এবং ঘরের স্থায়িত্ব বাড়াতে সাহায্য করে। শেগুন, শাল, মহগনি এবং গামারি কাঠের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য এবং দাম জানলে সঠিক কাঠ নির্বাচন সহজ হয়। কাঠ ব্যবহারে কিছু সাধারণ ভুল থেকে বিরত থাকা, কাঠ সংরক্ষণ এবং সঠিক প্রক্রিয়াকরণ কাঠের স্থায়িত্ব বাড়াতে সহায়ক। সঠিক কাঠ নির্বাচন এবং রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে কাঠের আয়ুষ্কাল বাড়ানো যায়। এভাবে কাঠের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে তা পরিবেশের উপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। আশা করি এই নিবন্ধের তথ্যগুলো কাঠ বাছাই এবং ব্যবহার সম্পর্কে আপনাকে সহায়ক হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *