আপেল গাছের চারা দাম ২০২৪ – আপেল গাছের চারা কোথায় পাওয়া যায়

আপেল গাছের চারা দাম

আপেল একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর ও জনপ্রিয় ফল যা সারা বিশ্বে চাষ করা হয়। বাংলাদেশ ও ভারতে আপেলের চাষ এখনও ব্যাপকভাবে প্রচলিত না হলেও বর্তমানে এই অঞ্চলে আপেল গাছের চারা ক্রয় এবং আপেল চাষের ব্যাপারে আগ্রহ বাড়ছে। মূলত উন্নত জাতের আপেল গাছ চারা পাওয়া যাচ্ছে এবং এই চারাগুলো বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে।-আপেল গাছের চারা দাম

২০২৪ সালে আপেল গাছের চারা কেনা ও রোপণ করার ক্ষেত্রে অনেককেই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হয় যেমন: চারার দাম, সঠিক স্থান নির্বাচন এবং আবহাওয়া। এই আর্টিকেলে আমরা আপেল গাছের চারা কোথায় পাওয়া যায়, এর দাম এবং চারা দেখতে কেমন তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। যারা আপেল চাষে নতুন বা যাঁরা বাণিজ্যিকভাবে আপেল গাছের চারা কিনতে আগ্রহী তাদের জন্য এটি একটি তথ্যবহুল গাইড হতে পারে।

আপেল গাছের চারা – বৈশিষ্ট্য ও প্রকারভেদ

আপেল গাছের চারাগুলো মূলত দুই ধরনের হতে পারে-

১। বীজজাত চারা  ২। কলমজাত চারা।

  • বীজজাত চারা: বীজজাত চারাগুলো বীজ থেকে উৎপন্ন হয় এবং এ ধরনের গাছের ফল উৎপাদনে বেশি সময় লাগে।
  • কলমজাত চারা: কলমজাত চারাগুলোতে বংশগত গুণাবলী ভালো থাকে এবং দ্রুত ফল দেয়। তাই যারা আপেল গাছের দ্রুত ফল প্রত্যাশা করেন তারা সাধারণত কলমজাত চারা কেনার দিকে ঝুঁকছেন। আপেল গাছের বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে যা নির্দিষ্ট আবহাওয়া ও মাটির ধরনে ভালোভাবে বৃদ্ধি পায়। উদাহরণস্বরূপ বাংলাদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় আপেল গাছের প্রজাতিগুলোর মধ্যে রয়েছে Anna Apple, Dorset Golden, এবং Fuji Apple যেগুলো দেশের আবহাওয়ায় তুলনামূলকভাবে ভালো ফল দেয়। আপেল গাছের চারা দেখতে সাধারণত ছোট এবং সবুজ পাতাযুক্ত হয়। গাছের বয়স অনুযায়ী চারা ছোট বা মাঝারি হতে পারে। একটি মানসম্পন্ন চারা সাধারণত ৩-৪ ফুট উচ্চতা নিয়ে থাকে এবং পাতা সতেজ ও সবুজ হয়।

আর পড়ুন: কাঠ সংরক্ষণের মূলনীতি ব্যাখ্যা 

আপেল গাছের চারা কোথায় পাওয়া যায়

বাংলাদেশে আপেল গাছের চারা এখন বিভিন্ন নার্সারি এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চল, যেমন ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, রংপুর, পঞ্চগড় অঞ্চলে বিভিন্ন নার্সারিতে উন্নত জাতের আপেল চারা বিক্রি হচ্ছে। এর পাশাপাশি ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং সিলেটের বিভিন্ন বাগান কেন্দ্র থেকেও আপেল গাছের চারা সংগ্রহ করা যায়।

ভারতের ক্ষেত্রে, হিমাচল প্রদেশ, জম্মু-কাশ্মীর এবং উত্তরাখণ্ড আপেল চাষের জন্য বিখ্যাত অঞ্চল। এই রাজ্যগুলির বিভিন্ন বাগানে উন্নত মানের আপেল গাছের চারা পাওয়া যায়। এছাড়াও দেশটির বড় শহরগুলোতে বিভিন্ন বাণিজ্যিক নার্সারিতে এই চারাগুলো পাওয়া যায়। ভারতের অনেক অনলাইন প্ল্যাটফর্মও আছে যেখানে আপেল গাছের চারা বিক্রি করা হয় এবং সেগুলো সারা দেশে সরবরাহ করা হয়।

আপেল গাছের চারা দাম ২০২৪- বাংলাদেশের বাজার

২০২৪ সালে আপেল গাছের চারার দাম বাংলাদেশে বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত দাম নির্ভর করে চারার জাত, উচ্চতা এবং গুণমানের ওপর। নিম্নে কিছু আনুমানিক মূল্য উল্লেখ করা হলো:

  • বীজজাত আপেল গাছের চারা: ১৫০-২০০ টাকা (প্রতি চারা)
  • কলমজাত আপেল গাছের চারা: ৩০০-৫০০ টাকা (প্রতি চারা)
  • উন্নত জাতের কলমজাত চারা: ৫০০-৮০০ টাকা (প্রতি চারা)

অনেক সময় নার্সারিতে বিক্রয়কৃত চারাগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন ছাড় এবং সেবা পাওয়া যায়। যেমন কিছু নার্সারি চারার সাথে গাছের প্রাথমিক যত্নের নির্দেশনা বা প্রয়োজনীয় সার প্রদান করে। এছাড়াও অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে চারা কিনলে ডেলিভারি চার্জ প্রযোজ্য হতে পারে যা দামের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

আপেল গাছের চারা দাম ২০২৪ – ভারতের বাজার

ভারতের বাজারে আপেল গাছের চারার দাম তুলনামূলকভাবে কিছুটা বেশি বিশেষ করে উন্নত মানের চারাগুলোর ক্ষেত্রে। মূলত প্রজাতির উপর ভিত্তি করে দাম নির্ধারণ করা হয় এবং এটি স্থান অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আপেল চাষ ব্যাপক হওয়ায় স্থানীয় বাজারে এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে দাম ভিন্ন হতে পারে। কিছু সাধারণ দাম নিম্নে উল্লেখ করা হলো:

  • বীজজাত আপেল গাছের চারা: ₹১০০-₹২০০ (প্রতি চারা)
  • কলমজাত আপেল গাছের চারা: ₹৪০০-₹৮০০ (প্রতি চারা)
  • ন্নত জাতের কলমজাত চারা: ₹৮০০-₹১৫০০ (প্রতি চারা)

হিমাচল প্রদেশ, জম্মু-কাশ্মীর এবং উত্তরাখণ্ডের নার্সারিগুলো থেকে উন্নত মানের চারা কেনা গেলে দামের ক্ষেত্রে সামান্য বৃদ্ধি দেখা যেতে পারে কারণ এই অঞ্চলগুলোতে আপেল চাষের গুণগত মান বেশি। অনেক ক্ষেত্রেই অনলাইন অর্ডারে বিশেষ ছাড় এবং ফ্রি ডেলিভারি অফার করা হয়।

আপেল গাছের চারা কেনার ক্ষেত্রে কি কি বিবেচ্য বিষয় রয়েছে

আপেল গাছের চারা কেনার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করতে হবে। আপেল গাছের জন্য মাটির ধরন, জলবায়ু এবং অন্যান্য শর্তাবলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চারা কেনার আগে এসব বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

  • বাগানের জমির ধরন: আপেল গাছ ভালোভাবে বৃদ্ধি পেতে ফসলি ও বেলে দোআঁশ মাটির প্রয়োজন হয়। বেশি জল ধরে রাখে এমন মাটিতে আপেল গাছের শিকড় ভালোভাবে বিকাশ লাভ করে না।
  • আবহাওয়া: আপেল গাছের জন্য ঠাণ্ডা ও শীতল পরিবেশ প্রয়োজন। এমনকি বাংলাদেশে আপেলের জন্য উত্তরের জেলা যেমন পঞ্চগড় এবং ঠাকুরগাঁওকে সবচেয়ে উপযুক্ত মনে করা হয় যেখানে শীতের সময় তাপমাত্রা কম থাকে।
  • সঠিক প্রজাতি নির্বাচন: গাছের জাত নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেমন দক্ষিণ এশিয়ার জলবায়ুর সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য Anna এবং Dorset Golden প্রজাতির আপেল গাছ উপযুক্ত। এই জাতগুলো কম শীতপ্রবণ এলাকাতেও ভালোভাবে ফল দিতে সক্ষম।
    গাছের চারা কেনার সময় এসব বিষয় বিবেচনা করা উচিত যাতে আপেল গাছ সঠিকভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে এবং ভালো ফলন দিতে পারে।

আর পড়ুন: কাঠ সিজনিং কী 

আপেল গাছের চারার সঠিক যত্ন ও পরিচর্যা

আপেল গাছের চারা রোপণের পর সঠিক যত্ন ও পরিচর্যা না করা হলে গাছের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হতে পারে এবং ফলন কমে যেতে পারে। সঠিক পরিচর্যার জন্য কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করতে হবে:

  • মাটি প্রস্তুতকরণ: চারা রোপণের আগে মাটি গভীরভাবে খুঁড়ে নরম করতে হবে এবং এতে প্রয়োজনীয় সার মিশিয়ে মাটির পুষ্টিমান বাড়াতে হবে। আপেল গাছ সাধারণত ভালোমানের জৈব সার পছন্দ করে যেমন গোবর বা কম্পোস্ট সার।
  • পানি দেওয়া: আপেল গাছের চারাগুলোকে প্রথম কয়েক মাস পর্যাপ্ত পানি দিতে হবে তবে মাটি যেন বেশি ভিজে না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। বেশি পানি দিলে শিকড় পচে যেতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার পানি দেওয়া উচিত বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে।
  • সার প্রয়োগ: বছরে অন্তত দুইবার গাছের গোড়ায় সার প্রয়োগ করতে হবে যাতে গাছের বৃদ্ধি দ্রুত হয় এবং ফলন বৃদ্ধি পায়। মাটি পরীক্ষার মাধ্যমে সারের ধরন ও পরিমাণ নির্ধারণ করা যেতে পারে।
  • রোগবালাই থেকে সুরক্ষা: আপেল গাছের চারায় রোগবালাই হতে পারে যেমন পাতা ঝরে পড়া, শিকড়ে পচন বা পোকামাকড়ের আক্রমণ। এসব থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও নিয়মিত গাছের পাতা ও ডালপালা পরীক্ষা করা উচিত যেন কোনো রোগ দ্রুত সনাক্ত করা যায়।
    সঠিক যত্নের মাধ্যমে আপেল গাছ দ্রুত বড় হয় এবং তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে ফল ধরতে শুরু করে। এটি একটি ধৈর্যশীল প্রক্রিয়া তবে নিয়মিত পরিচর্যা গাছের সুস্থ বৃদ্ধি নিশ্চিত করে।

আপেল গাছ চাষের জন্য সেরা সময়

আপেল গাছ রোপণের জন্য সঠিক সময় নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সময়মতো রোপণ করলে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয় এবং ফলনও বেশি হয়। সাধারণত শীতের শেষে এবং বসন্তের শুরুতে (জানুয়ারি থেকে মার্চ) আপেল গাছের চারা রোপণ করা উচিত। এ সময় আবহাওয়া তুলনামূলকভাবে ঠাণ্ডা থাকে এবং গাছের জন্য অনুকূল পরিবেশ থাকে।

  • বাংলাদেশে: উত্তরাঞ্চলের এলাকায় ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে চারা রোপণ করা হয়। শীতের সময় মাটির তাপমাত্রা নিচে থাকে যা আপেল গাছের শিকড় বৃদ্ধির জন্য সহায়ক। এই সময়ে রোপিত গাছগুলো বসন্তে ভালোভাবে বৃদ্ধি পায়।
  • ভারতে: ভারতের হিমাচল প্রদেশ, জম্মু-কাশ্মীর এবং উত্তরাখণ্ডে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে চারা রোপণ করা হয়। এ সময় তাপমাত্রা আপেল গাছের জন্য উপযোগী এবং সঠিক যত্ন নিলে ফলন ভালো হয়। ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে কিছু প্রজাতি অন্য সময়েও রোপণ করা যায় তবে ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় ফলন ভালো হয়।

ফসল তোলার সময়কাল মূলত চাষের জাত ও আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে। কিছু প্রজাতি জুন-জুলাই মাসে ফল দিতে শুরু করে আবার কিছু প্রজাতি সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে ফল দেয়। সঠিক সময়মতো রোপণ করলে আপেল গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত হয়।

আপেল গাছের চারার উপকারিতা

আপেল গাছের চারা রোপণের মাধ্যমে অনেক ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায় বিশেষত যারা বাণিজ্যিকভাবে আপেল চাষ করছেন এবং ব্যক্তিগত বাগান স্থাপন করতে চান তাদের জন্য। নিচে আপেল গাছ চাষের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা উল্লেখ করা হলো:

  • অর্থনৈতিক উপকারিতা: আপেল গাছের চাষ বাংলাদেশ এবং ভারতের কৃষকদের জন্য একটি লাভজনক উদ্যোগ হতে পারে। আপেল একটি উচ্চমূল্যের ফল যার চাহিদা সারা বছর থাকে। দেশীয় বাজারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও এর চাহিদা রয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে আপেল গাছ চাষ করা হলে ভালো আয় হতে পারে। উন্নতমানের আপেল বাগান স্থাপনের পর কয়েক বছরের মধ্যেই এই বিনিয়োগ থেকে লাভ আসতে শুরু করে।
  • স্বাস্থ্য উপকারিতা: আপেল একটি পুষ্টিকর ফল যা উচ্চমানের ফাইবার, ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে। যারা নিজেদের বাগানে আপেল গাছ লাগাচ্ছেন তারা প্রতিদিন তাজা ফল উপভোগ করতে পারেন এবং পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারেন।
  • বাগানের সৌন্দর্য বৃদ্ধি: ব্যক্তিগত বাগানে আপেল গাছ থাকলে বাগানের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। গাছে ফুল ধরার সময় (বসন্তের দিকে) এবং ফল ধরার সময় বাগান অত্যন্ত সুন্দর দেখায়।
  • স্থায়িত্ব ও পরিবেশগত উপকারিতা: আপেল গাছ অন্যান্য গাছের মতোই পরিবেশে অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে। আপেল গাছ চাষের মাধ্যমে স্থানীয় পরিবেশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলা সম্ভব।

 আপেল গাছের চারা এবং পরিবেশগত প্রভাব

আপেল গাছের চাষের মাধ্যমে শুধু অর্থনৈতিক উপকারিতা নয় পরিবেশগতভাবেও অনেক সুফল পাওয়া যায়। একটি সুস্থ আপেল গাছ গড়ে ১০-১৫ বছর পর্যন্ত ফল উৎপাদন করতে পারে যা স্থানীয় পরিবেশে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসে:

  • মাটি সংরক্ষণ: আপেল গাছ মাটির উপরের স্তর ধরে রাখতে সাহায্য করেযা মাটির ক্ষয় রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চারা রোপণের সময় সঠিক পরিচর্যা করলে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়।
  • জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব: আপেল গাছ অন্যান্য ফল গাছের মতো বায়ুতে থাকা কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে এবং গাছের বৃদ্ধির সময় অক্সিজেন নিঃসরণ করে। এর ফলে স্থানীয় জলবায়ুর ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। এছাড়াও গাছগুলোর ছায়া স্থানীয় তাপমাত্রা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
  • জল সংরক্ষণ: সঠিকভাবে গাছের যত্ন নিলে এটি এলাকার পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ায়। বিশেষ করে এমন এলাকায় আপেল গাছের চাষ করা হয় যেখানে জলপ্রবাহ কম সেখানে এটি জল সংরক্ষণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
    পরিবেশগত উপকারিতার কারণে আপেল গাছ শুধু ব্যক্তিগত বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে নয় পরিবেশ সংরক্ষণের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

কীভাবে ভালো মানের আপেল গাছের চারা নির্বাচন করবেন

ভালো মানের আপেল গাছের চারা নির্বাচন করা সঠিক ফলন এবং গাছের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নে কিছু টিপস উল্লেখ করা হলো যা মানসম্পন্ন চারা নির্বাচন করতে সাহায্য করবে:

  • চারা গাছের স্বাস্থ্যগত অবস্থা: একটি ভালো মানের চারা সবুজ ও সতেজ পাতাযুক্ত হয়। গাছের কান্ড মজবুত এবং ক্ষতবিহীন থাকা উচিত। এছাড়া শিকড় সুস্থ ও সাদা রঙের হওয়া উচিত যা নির্দেশ করে যে চারা দ্রুত মাটিতে শিকড় ছড়াতে সক্ষম হবে।
  • বিশ্বস্ত সরবরাহকারী নির্বাচন: চারাগাছের সরবরাহকারী বা নার্সারির নির্ভরযোগ্যতা গুরুত্বপূর্ণ। কোনো স্থানীয় নার্সারি বা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে কিনলে তাদের রিভিউ বা পরিচিতদের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।
  • জাত নির্বাচন: আপনার এলাকার জলবায়ুর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রজাতি নির্বাচন করতে হবে। যদি শীতপ্রধান এলাকায় আপেল চাষ করা হয় তাহলে হিমাচল প্রদেশ বা কাশ্মীরের প্রজাতি বেছে নেওয়া উচিত। অন্যদিকে উষ্ণ এলাকায় Anna এবং Dorset Golden জাতের চারাগুলো ভালো ফলন দিতে পারে।

আপেল গাছের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা – বাংলাদেশ ও ভারত

বাংলাদেশ ও ভারতে আপেল গাছের চাষের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে সফল হওয়ার সম্ভাবনা দিন দিন বাড়ছে। যদিও আপেল গাছের চাষ এতদিন শীতপ্রধান অঞ্চলে সীমাবদ্ধ ছিল এখন কিছু উন্নত জাত এবং কৌশল ব্যবহার করে উষ্ণ জলবায়ুতে আপেল চাষ করা সম্ভব হচ্ছে।

  • বাংলাদেশ: বাংলাদেশের পঞ্চগড় এবং ঠাকুরগাঁও অঞ্চলে আপেল গাছের চাষ বাড়ছে। সঠিক জাতের নির্বাচন ও চাষ পদ্ধতির উন্নয়নের মাধ্যমে আপেল চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা হিসেবে উঠে আসছে।
  • ভারত: ভারতে আপেল উৎপাদনকারীরা প্রধানত জম্মু-কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডে বাণিজ্যিকভাবে আপেল চাষ করছেন। তবে দেশের দক্ষিণাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলেও আপেল চাষের প্রচেষ্টা চলছে।

বাণিজ্যিকভাবে আপেল চাষের জন্য সরকারিভাবে বিভিন্ন সহায়তামূলক কর্মসূচি চালু রয়েছে যা নতুন চাষিদের জন্য বিশেষভাবে সহায়ক।

আর পড়ুন: হাতিশুর গাছ 

উপসংহার

আপেল গাছের চারা চাষ বাংলাদেশ ও ভারতের কৃষকদের জন্য একটি নতুন ও সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই আর্টিকেলে আপেল গাছের চারা, দাম, পরিচর্যা, সঠিক সময় এবং চাষের উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যারা আপেল গাছের চারা কেনার পরিকল্পনা করছেন তাদের জন্য এই গাইডটি একটি সহায়ক হাতিয়ার হতে পারে। আপেল চাষের মাধ্যমে অর্থনৈতিক লাভের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষারও সম্ভাবনা রয়েছে।

আপনি যদি আপেল চাষে আগ্রহী হন তবে সঠিক জাতের চারা কিনুন, সঠিক সময়ে রোপণ করুন এবং সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে আপনার বাগানের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলুন। আপনার মতামত শেয়ার করুন এবং যদি আপনি আপেল চাষ নিয়ে আরও জানতে চান আমাদের অন্যান্য আর্টিকেল পড়তে ভুলবেন না!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *